ধ্বসের শুরু তৃতীয় দিন লাঞ্চের একটু আগে থেকে। ৫ ওভারের মধ্যে মাত্র ৯ রানে তিন উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের। সেই ধস থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। দিনের দ্বিতীয় সেশনে শেষ ৬ উইকেট মাত্র ৫২ রানে হারিয়ে ১৭৮ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ৩৫৩ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেছে শ্রীলঙ্কা।
চট্টগ্রামের উইকেট এখনও কঠিন হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটারদের আউট করার কৌশল ধরে ফেলে শ্রীলঙ্কান বোলাররা। একের পর এক ফাঁদ তৈরি করে সাকিব-লিটনদের আউট করতে। আর সেই ফাঁদে অনায়াসে পা দিয়ে উইকেট দিয়ে আসলেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা।
লঙ্কান ব্যাটাররাও একই উইকেটে রান তুলেছেন। সেঞ্চুরি না এলেও ছয় ফিফটিতে হয়েছে সেঞ্চুরিহীন সবচেয়ে বেশি দলীয় রানের রেকর্ড। কিন্তু একই উইকেটে বাংলাদেশ ব্যাটাররা ভুলের রেলগাড়ি ছোটালেন। ভালো উইকেটে মাত্র একটি ফিফটি এসেছে বাংলাদেশের ইনিংসে। জাকির হাসানের ওই লড়াইয়ে ছাড়া বাকিদের কেউই আর দাঁড়াতে পারেননি।
দুই দলের টেস্ট মানসিকতার পার্থক্যটাও যেন স্পষ্ট করে দিল বাংলাদেশের এই ইনিংস। বিশ্ব ও আসিথা ফার্নান্ডোরা বাংলাদেশ ব্যাটারদের মনোযোগ একদিকে নেয়ার কৌশল তৈরি করেন। এরপর হঠাৎ একটি বল দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটারদের মনোযোগ ভেদ করে অন্য লাইনে। সফরকারীদের ছোঁড়া এই বাণ আর আটকাতে পারছেন না কেউই।
সবচেয়ে অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানের উইকেটটাই ধরা যাক। ২৩ বলে ১৫ রান করা সাকিবকে আগের কয়টি বলে বাউন্সার দিলেন আসিথা। কিন্তু ওভারের তৃতীয় বলটি সজোরে অফস্ট্যাম্পে একদম ফুলার লেন্থে করেন আসিথা। বাউন্সারের অপেক্ষায় থাকা সাকিব আর ব্যাট ঠিক সময়মতো নামাতে পারলেন না। ফলে এলবিডব্লিউ।
একই ওভারে লিটন দাস নেমেই আসিথাকে চার মেরে শুরু করেন। কিন্তু পঞ্চম স্ট্যাম্পের ওই একই লাইন থেকে সরে আসেননি এই পেসার। পরের দুটি বলও একই চ্যানেলে করেন। তার একটিতে পেয়ে গেলেন উইকেট। গুডলেন্থ থেকে চতুর্থ স্ট্যাম্পের ওপর করা বলটি খেলবেন না ছাড়বেন এ দ্বিধায় থেকে খোঁচা মেরে দেন লিটন। উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন ৩ বলে ৪ রান করে।
তরুণ শাহাদাত হোসেন দিপু ৩৬ বলে ৮ রান করে উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের মতোই ফ্রন্ট ফুট ড্রাইভ খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন। মেহেদি হাসান মিরাজও ৩১ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে বল বুঝতে না পারায় আউট হন। আগের ওভারে হাফভলি বল করা প্রবাথ জয়াসুরিয়ার আর্ম ডিলেভারি হয়ে আসা বলটি অবশ্য একটু কঠিনই ছিল মিরাজের জন্য।
একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যাওয়া মুমিনুল হকও পরাস্ত হন অবশেষে। ৮৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস থামে বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলেই। সাকিবকে আউট করার মতো মুমিনুলকেও ইয়র্কার লেন্থের বল দিয়ে পরাস্ত করেন। শেষ উইকেট হিসেবে খালেদকেও তুলে নেন ৪ উইকেট নেয়া ফার্নান্ডো।