তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ভালোই খেলছিলেন জাকির হাসান। তাদের শান্ত ও ধৈর্যশীল ইনিংসে বাংলাদেশের ইনিংসও বড় হচ্ছিল। লাঞ্চের আর ২০ মিনিটের মতো বাকি তখন। ঠিক ওই সময়ই যেন কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে গেল। মাত্র ৫ ওভারের মাথায় তিন উইকেট নেই। ১ উইকেটে ৯৬ থেকে মুহূর্তেই ৪ উইকেটে ১০৫ রানে পরিণত বাংলাদেশ।
বিশ্ব ফার্নান্ডোর দুটো অবিশ্বাস্য ইন সুইং ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট বিলিয়ে দেয়ায় এই অবস্থা স্বাগতিকদের। অবশ্য বাকি সময়টা সাকিব আল হাসান ও মুমিনুল হক আর বিপদ ঘটতে দেননি। সাকিব ৬ ও মুমিনুল ২ রানে অপরাজিত। বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ১১৫ রানে টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশন পার করেছে। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের সঙ্গে দূরত্ব এখনও ৪১৬ রানের।
১ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে দিন শুরু করেন জাকির ও তাইজুল। প্রথম ঘণ্টা দারুণ ভাবেই পার করেন তারা। দুজনের জুটি ছিল ৪৯ রানের। ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট ফিফটি করে বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন জাকির। তাতে বাধা হয়ে গেল বিশ্ব ফার্নান্ডোর ইনসুইংগার। অফস্ট্যাম্পের বাইরে থেকে মারাত্মক ভাবে বল বাঁক নিল তৃতীয় স্ট্যাম্পের দিক। কঠিন ডিলেভারিটি আর সামলাতে পারেননি জাকির। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ১০৪ বলে ৮ রানে ৫৪ রান করেন জাকির।
তবে তিন ওভার পর অধিনায়ক নাজমুল শান্তর উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসা কোন ভাবেই মানা যায় না। শান্তকে থামাতেই ব্যাটের কাছাকাছি ৩০ গজের ভেতর চার ফিল্ডার রাখেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। বাঁহাতি স্পিনার ফিল্ডিং সাজানো মতো শান্তর পায়ে বল ফেলছিলেন। যেন বড় শট খেলা বা ফ্লিক করে ক্যাচ আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ঠিক সেই ফাঁদেই পা দেন শান্ত। বাতাসে ভাসানো বলটি ডিফেন্স করার বদলে ফ্লিক করলেন। আর বল চলে গেল শর্ট মিড উইকেট অঞ্চলে থাকা দিমুথ করুনারত্নের হাতে। ১১ বলে ১ রান করে উইকেট ছুঁড়ে এলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
পরের ওভারেই বিদায় নেন নাইটওয়াচম্যান হয়ে নামা তাইজুল ইসলাম। ৬১ বলে ২২ রানের ইনিংসে দারুণ লড়াই উপহার দেন তাইজুল। আউট হওয়ার আগের বলটিতেই দুর্দান্ত পুল শটে বিশ্বকে বাউন্ডারী মারেন। কিন্তু পরের বলে বিশ্বর করা ইনসুইংগারে পরাস্ত হন। বল তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে স্ট্যাম্পে লাগে।
দ্রুত সময়ে তিন উইকেট হারিয়ে ভালো অবস্থান থেকে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের পুরোনো সমস্যা। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও তা ফিরলো। দুই অভিজ্ঞ সাকিব-মুমিনুলের হাতেই এখন লড়াই ফিরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব।