তৃতীয় দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে জাকির হাসান বলেছিলেন, “আমরা টোটালি ফেইল করেছি”। পরিস্থিতি বিবেচনায় সহজ স্বীকারোক্তি। তবুও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াই করা যেত। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে শুধু ক্রিজে পড়ে থেকে ৫ সেশন ব্যাট করার পণ করা যেত। বাংলাদেশ ব্যাটাররাও হয়তো করেছিলেন। কিন্তু আর সব বারের মতো এবারও ব্যাটিং ব্যর্থতাই সঙ্গী। তাই চট্টগ্রাম টেস্ট হার এখন সময়ের ব্যাপার।
টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৬৮ রান করেছে। মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৪ ও তাইজুল ইসলাম ১০ রানে ব্যাট করছেন। লক্ষ্যের চেয়ে ২৪৩ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য লঙ্কানদের চাই মাত্র ৩ উইকেট। এই অবস্থা থেকে ম্যাচ বাঁচানো একদম অতিমানবীয় কিছু না ঘটলে একদম অসম্ভব।
ইতিহাসে টেস্ট ম্যাচ বাঁচাতে উইকেটে পড়ে থাকার উদাহরণ তৈরি করেছিলেন ব্যাটাররা। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টেস্ট ড্র করতে ২২২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ভিলিয়ার্স। এরকম ইনিংস ওই বছরের পর তার আরও দুটি আছে। অথচ ইতিহাসে অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটার তিনি। তবুও দলের প্রয়োজনে টেস্টের সর্বোচ্চ মানসিকতাটা দেখাতে পারেন।
এছাড়া বাংলাদেশের সাবেক ব্যাটার জাভেদ ওমরের ২৫৮ বলে ৪৩, ৩২২ বলে ৮০ ও ৩৫৭ বলে ১১৯ রানের ইনিংসগুলো লম্বা ব্যাটিং করার উদাহরণ তৈরি করেছে। সেই উদাহরণকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম টেস্টে লড়তে পারতেন সাকিব-মুমিনুলরা। কিন্তু সেই টেস্ট মানসিকতা দেখা যায়নি।
তাই ম্যাচ বাঁচানোর পথও তৈরি হয়নি। চতুর্থ দিন চা বিরতির পর সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসকে নিয়ে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন। তাদের স্বাভাবিক ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল বড় ইনিংস উপহার দেবেন দুজনই। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। ৬১ রানের ভালো জুটি ভাঙ্গে পার্টটাইম স্পিনার কামিন্দু মেন্ডিসের বলে। ৫৩ বলে ৩ চারে ৩৬ রান করা সাকিবকে ক্যাচ আউট করে টেস্টে নিজের প্রথম উইকেট নেন কামিন্দু।
মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে লিটন দাশও বিদায় নেন ৭২ বলে ৪ চারে ৩৮ রানে। লাহিরু কুমারার আউটসাইড অফস্ট্যাম্পের বল খেলতে গিয়ে সিরিজে আরও একবার উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। শাহাদাত হোসেন দিপু ৩৪ বলে ২ চারে ১৫ রান করে কাট শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন গালিতে। মিরাজের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি ছিল তার।
দিনের শেষ ৬টি ওভার অবিচ্ছিন্ন থেকেই কাটিয়ে দিতে সফল হন মিরাজ ও তাইজুল। ম্যাচ হার আটকানো কঠিন, পঞ্চম দিনে এ দুই ব্যাটারের লক্ষ্য থাকবে সময়টা যতদূর নিয়ে যাওয়া যায়।