Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

দায়িত্ব ছাড়ার রাস্তাও খোলা রাখলেন গাজী আশরাফ

04efa7a9-9cbc-4588-ba21-bdb475cb4786
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব শুরুই করেননি এখনও গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। শুরু করবেন ১ মার্চ থেকে। তার আগেই কেন দায়িত্ব ছাড়ার কথা উঠছে ! উঠছে। কারণ অতীতে নির্বাচন কাজে চাপের সংস্কৃতিই জাগিয়ে রাখছে ভবিষ্যতের শঙ্কা। আর এই শঙ্কা মাথায় নিয়েই প্রধান নির্বাচক মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে দিয়ে গেলেন কঠিন বার্তা। অনাকাঙ্খিত চাপে এলে বা কাজের স্বাধীনতা খর্ব হলে ফেরার রাস্তাও খুলে রেখেছেন গাজী আশরাফ হোসেন।

অতীতে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কী হয়েছ তা অজনা নয় লিপুর। সেই অনাকাঙ্খিত হস্তক্ষেপ এড়াতেই প্রধান নির্বাচক আগেভাগেই যেন বিসিবিকে সতর্ক বার্তা দিয়ে রাখলেন, “স্বাধীন ভাবে কাজ না করতে পারলে তো কাজ করে কোন আনন্দ নেই। কাজ করতে গিয়ে যদি স্বাধীনতা খর্ব হয়, সেটা আপত্তিজনক। তাছাড়া রাস্তা সবসময় খোলা আছে। আসার রাস্তার মতো যাওয়ার রাস্তাও খোলা।” অর্থাৎ পছন্দ না হলে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে তিনি সবসময় প্রস্তুত।

লিপুর ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের কথা ক্রিকেটের লোকজন কম বেশি জানেন। একই সঙ্গে দৃঢ় ব্যাক্তিত্বের অধিকারীও। এই জায়গাতেই হয়তো বিদায়ী প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে তার খানিকটা তফাৎ। তবে সাবেক বোর্ড পরিচালক লিপুর সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকে কোনো সংশ্রব নেই বিসিবির। বোর্ডের ভুল দেখলে সোচ্চার হওয়া ছাড়া তিনি মনের আনন্দে খেলা দেখেছেন আর নিজের মতো বিশ্লেষণ করেছেন। দশ বছর পর আবার নতুন দায়িত্ব নিয়ে ঢুকছেন বোর্ডে। তার আগে স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েই প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি ও অন্য নির্বাচক সদস্য হান্নান সরকার। তিন সদস্যের নির্বাচকমন্ডলীতে টিকে গেছেন কেবল সাবেক স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক।

নির্বাচকদের কাজের স্বাধীনতার পাশাপাশি দল নির্বাচনে কোচ ও অধিনায়কের মতামতও গুরুত্ব পাবে। প্রধান নির্বাচক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করতে চান দল নির্বাচনে, “ কাজ করার স্বাধীনতা থাকবে। এ ব্যাপারে বোর্ডের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আগে (নির্বাচন প্রসঙ্গে) কি হয়েছে সে ব্যাপারে আমি কথা বলতে চাই না। দল নির্বাচনে অধিনায়ক ও কোচ অবশ্যই যুক্ত থাকবেন। সবার মতামত মিলিয়েই আমরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে সিস্টেম আছে সে অনুযায়ী কাজ করবো।”

কোচ ও অধিনায়কের মতামত আগেই থাকতো। তবে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের চাপ খানিকটা বেশি থাকে বলেই ক্রিকেটাঙ্গনে গুঞ্জন আছে। শ্রীলঙ্কান কোচের বাড়তি চাপটা সামলে নেওয়াও নির্বাচকমন্ডলীর জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। শুনেই লিপু একটু মজা করে বললেন, “বল তো এখনও ছোঁড়াই হয়নি। আগে বল আসুক তারপর আমি দেখবো, বলটা কীভাবে খেলবো। আসলে কোচের সঙ্গে আমার এখনও কথাই হয়নি। কথা বলব, আলোচনা হবে অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য যা ভালো সেগুলোতে একমত হয়েই আমরা কাজ করবো।”

প্রধান নির্বাচক চান সব ক্রিকেটারের পরিসংখ্যান তার ল্যাপটপে রাখতে, “আমার যে ভিশন সেটা হল একটা ডাটা বেইজ তৈরি করা। আগে যারা নির্বাচক হিসেবে কাজ করেছেন তাদের কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি নিজে কীভাবে কজ করবো, কি করতে পারব বা পারব না সেটা সময়ই বলে দেবে। এটা নিশ্চিত, ভালো কিছুর স্বার্থে দলের জন্য ছাড় দিতে কখনও পিছপা হবো না, সেই ইগো নিয়েও চলবো না।”

প্রসঙ্গ উঠেছিল বিদায় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা। কখনো কখনো তার খেলোয়াড় নির্বাচন সাধারণ মানুষের পছন্দ হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটের জন্য লিপু ও হান্নান সরকার দুজনই প্রস্তুত আছেন জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, “আমরা যখন খেলতাম তখন ক্লাব ক্রিকেটেও অনেক দর্শক আসতো। তখন আমরা অনেক গালি খেতাম। জিতলে প্রতিপক্ষের, হারলে পক্ষের সমর্থকদের। ক্রিকেট খেলাটা আসলে চাপের। যারা মাঠে খেলবেন তাদের ওপর মিডিয়ার চাপ ও পারফরম্যান্স ভালো করার চাপ থাকে। ঠিক একই ভাবে মাঠের বাইরে যারা দল সংশ্লিষ্ট লোকজন আছি, তাদেরও নানা সময়ে এই চাপটা নিতে হবে। সমালোচনা শুনতে হবে। এটা যার যার রুচির ব্যাপার। কে কীভাবে দেখছে, কীভাবে একটা বিষয়কে গ্রহন করছে। সেসব ক্রিকেটে হবেই।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত