শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উষ্ণতা আগের মতো নেই। দুই দেশের নেতৃত্বের বয়ানেও সম্পর্কের টানাপোড়েন এখন প্রকাশ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দুই দেশের কিছু মানুষের পারস্পরিক বিদ্বেষ নিত্য ঘটনা হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ আসন্ন ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট সিরিজে আনুষ্ঠানিক হুমকিও দিয়ে রেখেছে একটি ভারতীয় ধর্মীয় সংগঠন। স্বাভাবিকভাবে এটা শঙ্কিত করার মতোই ব্যাপার।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতে রওনা হওয়ার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। চেন্নাইয়ে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথম টেস্ট শুরু হবে। সূচী অনুযায়ী কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ২৭ সেপ্টেম্বর। এরপর ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজ শেষ হবে ১২ অক্টোবর।
তবে বাংলাদেশ দলের ভারত সফরকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ও নৃশংসতার অভিযোগ তুলে এই ধর্মীয় সংগঠন কানপুর টেস্ট ও গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাতিলের আহ্ববান জানিয়েছে। এমনকি গোয়ালিয়রে মাধব রাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামে পিচ খুঁড়ে ফেলারও হুমকি দিয়েছে তারা।
হিন্দু মহাসভার সহ সভাপতি জয়বীর ভরদ্বাজ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে, তারই প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। এমনকি মন্দিরও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে। এমন নৃশংসতার পরও আমরা ম্যাচ খেলছি বাংলাদেশের সঙ্গে ! এ কারণেই আমাদের প্রতিবাদ!”
হিন্দু মহাসভা লিখিতভাবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে তাদের প্রতিবাদ জানালেও বোর্ডের তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে তারা কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও দেয়নি। যদিও বিসিসিআই দ্বিতীয় টেন্টের ভেন্যু সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম খবর দিচ্ছে।
আসলে ওই ধর্মীয় সংগঠনের হুমকিতে পুরো সিরিজ নিয়ে নিরাপত্তা সংশয় তৈরি হয়েছে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেও ভাবতে হচ্ছে বৈকি।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, “এই ব্যাপারে আমরা বিসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলব। দল পাঠানোর আগে অবশ্যই ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যুতে আমরা আলাপ করব।”
দল পাঠানোর আগে সভাপতি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আশ্বস্ত হতে চাইছেন।
প্রয়োজন হলে ফারুক বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও পরামর্শ করবেন। তিনি বলেন, “কী ধরনের হুমকি, সেটাও আগে বুঝতে হবে আমাদের। অমন বড় কিছু হলে নিশ্চয়ই আমাদের সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গেও পরামর্শ করতে হবে। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই আছি।”