বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে সমাবেশ করার পর মিছিল নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে এল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কয়েকদিন আগে রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন নেতা বুয়েটে গিয়েছিলেন। তার প্রতিক্রিয়ায় বুয়েটে বিক্ষোভ থেকে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার দাবি পুনরায় ওঠে। তাদের দাবির মুখে ছাত্রলীগ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করে প্রশাসন।
তার প্রতিবাদে রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। দুপুরে সমাবেশ শেষে সভাপতি সাদ্দামের নেতৃত্বে বুয়েটের পথে রওনা হন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মুখে স্লোগান ছিল- ‘মৌলবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘শিবিরের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’।
দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী বুয়েটে শহীদ মিনারে ফুল দেয়। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থানের পর তারা ফিরে আসে।
এদিন বুয়েটের মূল ফটক এবং প্রবেশ পথ বন্ধ দেখা যায়। সিট বাতিল হওয়া বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রাহিমকে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা যায়।
ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের কোনও তৎপরতা এদিন দেখা যায়নি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন তারা।
২০১৯ সালে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা নিষিদ্ধ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন।
ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর পিটুনিতে নিহত হয়েছিলেন আবরার। সেই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মীর মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন সাজা হয়।
তিন দিন আগে বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে গেলে তার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার বিক্ষোভে নামে বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শনিবারও তারা পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ চালায়।
তাদের দাবির মুখে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা রাহিমের বুয়েটের হলের সিট বাতিল করে প্রশাসন। সেই সঙ্গে এই ঘটনা তদেন্ত কমিটি গঠনের কথাও জানান বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা ররিবার আবার বিক্ষোভের ডাকও দিয়েছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বুয়েটের এক কিলোমিটারের কম দূরত্বে শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সমাবেশ থেকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম।
তিনি বলেন, “আমরা আজ এখানে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। বুয়েটের এই সিদ্ধান্ত মৌলিক অধিকার পরিপন্থি, সংবিধান পরিপন্থি, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত।”
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ইমতিয়াজ রাহিমের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতেও বুয়েট প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি।