পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, চাকরিচ্যুত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও কারাবন্দিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে কক্সবাজারের চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ পরিষদ।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবারও ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দাবি আসছে বিভিন্ন তরফ থেকে। সে ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সেনা ও বিডিআর পরিবার তো বটেই, তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদও ভিডিও বার্তায় সেই দাবি তুলেছেন।
সোমবার কক্সবাজারে অবস্থান কর্মসূচি শেষে ২০০৯ সালে চাকরি হারানো সব বিডিআর সদস্যের পক্ষে কল্যাণ পরিষদের সভাপতি হাবিলদার মো. একরামুল হুদার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০০৯ সালে তৎকালীন সরকার প্রতিবেশি একটি দেশকে সন্তুষ্ট করতে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি বাংলাদেশ রাইফেলসকে (বিডিআর) ধ্বংস করে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা সুদৃঢ় করতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। এ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হয়।
সংগঠনটির অভিযোগ, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ নামে অভিহিত করে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়। বর্তমানে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
স্মারকলিপিতে চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে ৯টি দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো-
১. পিলখানায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে কথিত বিদ্রোহ না বলে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে।
২. ওই ঘটনায় গঠিত সব প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে।
৩. চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও কুশীলবদের চিহ্নিত করতে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৫. পিলখানায় শাহাদাতবরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।
৬. ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দিনকে ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৭. যেসব নিরীহ বিডিআর সদস্যকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে, তাদের তালিকা করে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৮. হত্যাকাণ্ডে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগকারী বিডিআর সদস্যদের জামিন, মামলা থেকে অব্যাহতিসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।