ভোটের দুই দিন আগে রাজধানীর বুকে চলন্ত ট্রেন আগুনে জ্বলল, তাতে চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ট্রেনটি কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছনোর কিছু আগেই গোপীবাগ এলাকায় এটিতে আগুন ধরে বলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ট্রেনটি শুক্রবার বেলা ১টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসে। সেটি ঢাকায় পৌঁছার কথা রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এর মধ্যে গোপীবাগে পৌঁছলে আগুন দেওয়া হয় বলে সংবাদ পেয়েছি।”
আগুন লাগানোর খবর পেয়ে অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর সাতটি ইউনিট কাজ শুরু করে বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান।
তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরও তিনটি ইউনিট যোগ হয়।
ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত র্যাবের এক কর্মকর্তা। তবে পরে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। তবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
আহত দুজনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন রাত ১১টার দিকে বলেন, “প্রথমে একজন এসেছিলেন, এখন আরও একজন এসেছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। দুজনেরই ১৪ শতাংশের কম বার্ন হয়েছে, শ্বাসনালী ঠিক রয়েছে।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর প্রহরার মধ্যেই ঢাকা শহরে এ ঘটনা ঘটল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর অল্প কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ কাঁচাবাজারের সামনে আগুন দেখা যায়। প্রথমে ট্রেনের একটি বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। স্থানীয়রা যে যার মতো করে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তখন যাত্রীদের অনেকে নেমে যান। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির হরতাল-অবরোধের মধ্যে এর আগেও ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এবার হরতালের আগের রাতে এই ঘটনা ঘটল।
এবারের অগ্নিকাণ্ড নাশকতা না কি দুর্ঘটনা- জানতে চাইলে রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “ট্রেনের পাওয়ার কার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এটি নাশকতা নাকি গোলযোগ, বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।”