সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ যখন ডিএমপির কমিশনার ও র্যাবের প্রধান ছিলেন তখন তিনি সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের গুম-খুন করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
রবিবার সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে বেনজীরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে।
কায়সার কামাল বলেন, “ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার এবং র্যাবের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বেনজীর আহমেদ সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের গুম-খুন করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।
“এখন শুধুমাত্র তার দুর্নীতির বিচারই হবে না, বরং এসব গুম-খুনের বিচার করতে তাকে আজ হোক, কাল হোক আইনের আওতায় আসতেই হবে।”
বিএনপির এ নেতা বলেন, “২০১০ সালে তিনি পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে গুমের রাজ্য তৈরি হয়েছে। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা গুম হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গেও জড়িত তিনি। ডিএমপি কমিশনার হিসেবে তার পাঁচ বছরে অনেক সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন, অনেককে তিনি ক্রসফায়ার দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক থাকার সময় তিনি এত মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ব্যক্তিগতভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মানুষ তার দুর্নীতির বিচারের পাশাপাশি এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দেখতে চায়।”
বেনজীরের বিচারের নামে সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে কায়সার কামাল বলেন, “তার অর্থনৈতিক দুর্নীতিসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত ঢিমেতালে হচ্ছে। দুদকে তার পক্ষে কে, কোন গ্রাউন্ডে সময় নিয়েছেন- তার কোনও ব্যাখ্যা দেখিনি। তার পক্ষে আইনজীবী কে- সেটাও কেউ দেখেনি।
“এজন্য আমরা মনে করি, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বেনজীরকে রক্ষা করার জন্য যত ধরনের অপকৌশল নেওয়া দরকার, সে কৌশল নিচ্ছে। বেনজীর যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন, আজ হোক কাল হোক তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে।”
সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপরই তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে আদালতে আবেদনও হয়। তৎপর হয় দুদকও।
পরে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা পড়ে আদালতে। বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে থাকা গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটসহ ২০২টি দলিল, ২৭টি ব্যাংক একাউন্ট, ৯টি বিও একাউন্ড এবং ৫টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকানা শেয়ার ক্রোক ও জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ২৩ মে এবং ২৬ মে দুটি আলাদা আদেশে এ নির্দেশ দেয় ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত।