মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক অধিনায়ক। মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কিউয় ন্যায়ং স্যু বাংলাদেশের আশ্রয়ে ছিলেন ৮দিন। এই সময়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের আন্তরিকতায় তিনি মুগ্ধ।
বৃহস্পতিবার বিজিপির এই অধিনায়ককে তার দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের জন্য কক্সবাজার ইনানী জেটি এলাকায় আনা হয়। সেখানে তিনি বিজিবি ও বাংলাদেশের সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান।
কিউয় ন্যায়ং স্যু বলেন, “বিজিবি যেভাবে আন্তরিক সহযোগিতা দিয়েছে, যেভাবে আতিথেয়তা দেখিয়েছে তাতে সত্যি মুগ্ধ। ধন্যবাদ।”
মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষের জের ধরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন ৩৩০ জন। এর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক।
৭ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ৬৫ জন। এর মধ্যেই ছিলেন বিজিপির ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কিউয় ন্যায়ং স্যু।
বৃহস্পতিবার ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ইনানী জেটিতে আনা হয়। এসময় আরোপ করা হয় কড়া সতর্কতা ও বিধিনিষেধ। তার মধ্যে খুবই স্বল্প সময় পান গণমাধ্যমকর্মীরা।
বিজিবিসহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিজিপির কর্নেল মিও থুরা নউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ইনানী পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই ৩৩০ জনের কাগজ-পত্র যাচাই ও স্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
শুরুতেই প্রতিনিধি দলের প্রধান বিজিপির কর্নেল মিও থুরা নউং বিজিপির ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কিউয় ন্যায়ং স্যুকে ডাকেন এবং কথা বলেন। এসময় লে. কর্নেল কিউয় ন্যায়ং স্যু ইংরেজিতে বিজিবির আন্তরিকতার প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানান এবং মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেন।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, লে. কর্নেল কিউয় ন্যায়ং স্যুর সঙ্গে প্রতিনিধি দলটি কথা বলেছেন। তবে তারা কী বিষয়ে কথা বলেছেন তা জানেন না।
হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েও বাংলাদেশ সরকার ও বিজিবির প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রক্রিয়াটির মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক আরও উন্নত হয়েছে।