শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে গত সপ্তাহে বিতর্কে ধরাশায়ী হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ডেমোক্রেটিক শিবির।
প্রশ্ন ওঠে, বিতর্কে ট্রাম্পের সামনে দাঁড়াতেই না পারা ৮১ বছরের বাইডেন কি পারবেন নভেম্বরের নির্বাচনে জিততে? সেই শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা কি তার আছে? প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি কি এখন সমর্থ?
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-বাইডেনের বিতর্কের পর ডেমোক্রেটিক পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা এবং নির্বাচনী প্রচার দলের কর্মকর্তারা বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ দিতে থাকে।
গুঞ্জন ওঠে, যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন বাইডেন। তার জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ভোটের মাঠে ট্রাম্পের মুখোমুখি হবেন।
নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে বাইডেনের ওপর চাপ যখন ক্রমাগত বাড়ছে, ঠিক তখনই তিনি ঘোষণা দিলেন, লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না তিনি। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না।
একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে হোয়াইট হাউসে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রুদ্ধ দুয়ার বৈঠক করেন বাইডেন।
এরপর ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচনী প্রচার দলকে বাইডেন পরিষ্কারভাবে জানান, ভোটের মাঠে তিনি থাকছেন। বলেন, “আমি ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী। আমার জায়গায় কেউ আসছে না। লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে আমি যাচ্ছি না।”
কমলা হ্যারিসও এসময় তাকে সমর্থন জানান।
কয়েক ঘণ্টা পর একটি তহবিল সংগ্রহের ই-মেইলে একই কথা বলেন বাইডেন। বলেন, “যতটা সম্ভব স্পষ্ট করেই বলছি, আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকব।”
রয়টার্স জানিয়েছে, বাইডেন বুধবার কেবল নির্বাচনী প্রচার দলকেই নয়, একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ২৪টি অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির গভর্নর ও ওয়াশিংটন ডিসির মেয়রের সঙ্গে ভার্চুয়ালি ও সামনাসামনি দেখা করে তাদের আশ্বস্ত করে জানান, ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তিনি উপযুক্ত।
বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ২৪ জনের মধ্যে কেবল ৩ জন গভর্নর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। নিউ ইয়র্ক, মিনেসোটা ও মেরিল্যান্ড এই তিন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ভালো না করলেও নির্বাচনে বাইডেনের পক্ষেই থাকবেন তারা। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার সামর্থ্য তার আছে।
২৭ জুন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের স্টুডিওতে বিতর্কে মুখোমুখি হন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন।
বিতর্কে ট্রাম্পের প্রশ্নের ঠিকমতো জবাব দিতে পারেননি বাইডেন। তার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। কথার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন তিনি।
বিতর্কে ট্রাম্পের প্রশ্নবাণে বাইডেনকে কোণঠাসা হতে দেখে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে খোদ ডেমোক্রেটিক শিবিরেই।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে বাইডেন বলেছিলেন, দুটি দেশ সফর করে ক্লান্ত ছিলেন তিনি। এর প্রতিফলন পড়ে বিতর্কে। অন্যদিকে হোয়াইট হাউস জানায়, বাইডেনের ঠান্ডা লেগেছিল। এ কারণে বিতর্কে ভালো করতে পারেননি তিনি।