দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কয়েক সপ্তাহ পর থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। বরারবরই দলটির নেতারা বলছেন, জনগণের নির্বাচিত সরকারই বাকি সব সংস্কার করবে।
সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকেও সেই একই কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। ঢাকার একটি হোটেলে এই গোলটেবিলের আয়োজন করেছিল জাতিসংঘ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়েছে, আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা চানতে চান সাংবাদিকরা।
বিএনপির মহাসচিব জানান, মূলত সংস্কারের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবকে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের বক্তব্যে যে-সব কথা এতদিন ধরে বলে এসেছি সেই একই কথা আজকেও বলেছি। আমরা বলেছি, সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। কারণ, আমরাই (বিএনপি) সবার আগে সংস্কারের কথা বলেছি। কিন্তু সেই সংস্কার যত দ্রুত করা যায় ততই ভালো।
“অর্থাৎ আমরা বলেছি মূলত নির্বাচন কেন্দ্রিক যে সংস্কারগুলো আছে তা দ্রুত করে আগামী জাতীয় নির্বাচন শেষ করা। কারণ, সংস্কার যেহেতু একটি একটি চলমান প্রক্রিয়া তাই নতুন পার্লামেন্টের মাধ্যমে বাকি সংস্কার শেষ করতে হবে।”
জাতিসংঘের মহাসচিব উত্তরে কি বলেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি এ ব্যাপারে কোনও কমেন্ট করেননি।”
বৈঠকে আগামী নির্বাচনের ‘টাইমফ্রেম’ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “এখানে নির্বাচনের টাইমফ্রেমের বিষয়ে কথা বলার কোনও প্রয়োজনই নেই। কারণ, সংস্কার তো সম্পূর্ণ আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।”
তিনি বলেন, “আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। তারা যা চাইছে, আমরা সব দিচ্ছি। ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে আমাদের একটা বৈঠকও হয়েছে। সুতরাং এই বৈঠকে এসব নিয়ে কথা বলার তো প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমরা কোনও টাইমফ্রেম কেন দিতে যাব?”
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বৈঠকে জাতিসংঘের তরফ থেকে আমাদের বলেছে, আপনারা রিফর্ম (সংস্কার) কী নেবেন সেটা আপনাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সংস্কার কে করবে তা দেশের জনগণ ঠিক করবে।”
তিনি বলেন, “জাতিসংঘের মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ, সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
