Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

বিএনপির গড়া ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ছাত্ররা বিজয় এনেছে : ফখরুল

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

বিএনপির গড়ে তোলা ‘ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে’ তরুণ-যুবক-ছাত্ররা তাদের আন্দোলনকে বিজয়ের পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে ঢাকার নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা বিএনপি ১৭ বছর ধরে লড়াই করে একটা ভিত্তি তৈরি করেছি, সেই ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে আমাদের ছেলেরা তরুণ-যুবক-ছাত্ররা আন্দোলন বিজয়ের পর্যায়ে নিয়ে গেছে…বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে… আবু সাঈদ থেকে শুরু করে আরও অনেকে… প্রায় হাজার খানেক ছাত্র-শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে।”

৩-৫ আগস্ট ছাত্রদলের অনেকে প্রাণ দিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “বহু ছাত্রদলের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। আমি পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তখন ১২৪ জন ছিল। আমি খবর নিয়ে দেখলাম যে, সেখানে ৯০ জন হচ্ছে ছাত্রদলের ছেলে।”

ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে বসে ‘দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা দীর্ঘ লড়াই করেছি… তারপরে যদি মনে করেন যে, আমাদের লড়াই শেষ হয়ে গেছে তাহলে ভুল করবেন। এখন অত্যন্ত একটা ভাসমান অবস্থায় আছে। ভারতে বসে আছেন শেখ হাসিনা, তিনি তার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন… ইতোমধ্যে চক্রান্ত শুরু করেছে, সেই চক্রান্ত প্রতিরোধ করাই আমাদের কাজ।”

তিনি বলেন, “আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে আসুন আমরা সবাই সেই প্রতিজ্ঞাই আল্লাহ তায়ালার কাছে করি– তিনি যেন আমাদের বিএনপির যে ভাবমূর্তি, যেটা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৈরি করেছেন, বেগম খালেদা জিয়া তৈরি করেছেন, তারেক রহমান সাহেব তৈরি করেছেন, সেই ভাবমূর্তিকে সবাই অক্ষুণ্ণ রেখে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।”

উপাসনালয়-মন্দির-গীর্জা পাহারায় শান্তি বিগ্রেড তৈরির আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই যে কমিউনালিজমের কথা বলছে, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার এসব কথা বলছে… এটা একটা চক্রান্ত। এই কথা বলে ধোঁয়া তুলে তারা (আওয়ামী লীগ) আরেকটা ঝগড়া করতে চায়।

“আপনাদের দায়িত্ব নিজ নিজ এলাকায় শান্তি বিগ্রেড তৈরি করেন, শান্তি বিগ্রেড তৈরি করে পাহারা দেবেন। সমস্ত সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়, মন্দির, গীর্জা এ সমস্ত পাহারা দেবেন… তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা, তাদের জীবন-মালের দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের। তাদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে।”

‘নতুন ষড়যন্ত্র’ সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে পত্র-পত্রিকায় যে বিরূপ খবর দেখি, তখন কিন্তু আমরা আতঙ্কিত হই। আবার কোন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হচ্ছে যে, জনগণের ভোটকে জনগণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবার জন্য আবার কোন নব্য ফ্যাসিবাদ এসে উপস্থিত হচ্ছে কিনা। এ দিক থেকে সজাগ থাকতে হবে।

“না এই যুদ্ধকে জারি রাখতে হবে, এই সংগ্রামকে চালিয়ে যেতে হবে। তা না হলে আমরা কিন্তু অনেক বিপদে পড়ে যাব। এক ফ্যাসিবাদকে পরাজতি করেছি আমরা। নব্য ফ্যাসিবাদ যেন না আসতে পারে তার জন্যে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।”

‘জঞ্জাল’ সাফ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কিছু সময় দিতে হবে বলেও মত দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে– এই সরকার একেবারে নরম সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার… এটা মনে রাখতে হবে। তার দায়িত্ব একটা নির্বাচন করে দিয়ে যাবে… তাই না?

“জঞ্জাল জমা হয়েছে, এই জঞ্জাল তো সাফ করতে হবে। এজন্য তাদেরকে কিছু সময় তো দিতে হবে। সেইভাবে কাজ করে আমাদের সংগ্রামকে জারি রাখতে হবে। ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) যে আদর্শ তাকে অনুসরণ করতে হবে, ম্যাডামের যে বক্তব্য তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রেম ভালোবাসা দিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। কোনও প্রতিহিংসা নয়, কোনও প্রতিশোধ নয়।”

বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং চলমান আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়াও অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করে মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক।

ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে শুক্রবার মহানগর-জেলা-উপজেলায় দোয়া মাহফিল হচ্ছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, শাম্মী আখতার, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, যু্বদলের মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, উলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা কাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত