রাষ্ট্রক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দেশের ২৫ জেলায় নিয়োগ পাওয়া ডিসিরা সবাই ‘ছাত্রলীগের ছিল’ উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এরা গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করবে না।
মঙ্গলবার ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকায় ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত তিনজনের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের অর্থ সহায়তা তুলে দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
গত সোমবার দেশের ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “গতকাল ২৫ জন ডিসি নিয়োগ দিয়েছেন। ২৫ জন ডিসির সবাই ছিল ছাত্রলীগের। এরা এখন ডিসি হয়ে গেছে। এরা তো গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করবে না।
“যারা আয়নাঘর করেছে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড যারা ধামাচাপা দিয়েছে, যারা একের পর এক দুষ্কর্ম করেছে তাদেরকেই তো এরা প্রশ্রয় দিবে।”
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তারপর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে শুরু হয় রদবদল। কেউ পদত্যাগ করেন, কাউকে বহিষ্কার করা হয়।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা লিয়াকত আলী লাকী পদত্যাগ করেন গত ১২ আগস্ট। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান নাট্যনির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
জামিল আহমেদকে ‘ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর’ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “কেউ কেউ বলছেন, দেশে একটি স্থিতিশীল পরিবেশের জন্য শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ করা দরকার। কেন? হিটলারের সঙ্গে কী সংলাপ করা যায়? আমরা কী ইয়াহিয়া খান, টেক্কা খানকে ডেকে সংলাপ করব? এসব কথা বলা সৈয়দ জামিল আহমেদকে শিল্পকলা একাডেমির ডিজি বানানো হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কেন?”
কিছুদিন আগে সৈয়দ জামিল আহমেদের দেওয়া এক বক্তব্যের সূত্র ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তিনি কয়েকদিন আগে বলেছেন, পালিয়ে থাকা ‘রামেন্দ্র মজুমদার, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুকে নিয়ে আসা দরকার।’ আমার প্রশ্ন তারা পালিয়েছে কেন? ওরা আত্মগোপনে আছে কেন? আমরা তো দেখছি যারা ভদ্র আওয়ামী লীগার তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নানা কথা বলছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “আপনি সৈয়দ জামিল আহমেদ এই সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কিসের রাষ্ট্র তৈরি করতে চান। আবার আপনি শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চান? আপনি শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনলে হয়তো আপনাদের আবার সুবিধা হবে কিন্তু গোটা জাতি আবার ক্রীতদাস হয়ে যাবে। বন্দী হয়ে যাবে শেখ হাসিনার কাছে এবং তার প্রভু ভারতের কাছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আহ্বান জানান, আপনাদের দুর্বলতার সুযোগে কিংবা ভালো মানসিকতার সুযোগে ওই পরাজিত স্বৈরাচারের লোকেরা যেন কোনওভাবেই প্রতিষ্ঠা না পায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সকলের আস্থা আছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “ড. ইউনুস সকলের শ্রদ্ধাভাজন। কিন্তু উনাদেরকে দেখতে হবে পরাজিত ভয়ঙ্কর স্বৈরশক্তির দোসররা যদি মাথাচাড়া দেয় তাহলে আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে। রাস্তা দিয়ে কোনও সুন্দরী নারী হেঁটে গেলে যাকে পছন্দ হয় তাকে তুলে নিয়ে যাবে।”