Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যারা ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করবে, তাদের চিহ্নিত করুন : বিএনপি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

ভোটকেন্দ্রে যেতে কেউ বাধ্য করলে তাদের চিহ্নিত করতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকার গুলশানে নিজের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, “আমরা আজকে গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি এই আহ্বান জানাব— আপনারা এই জনপ্রিতিনিধিত্ববিহীন বর্তমান যে সরকার, সেই সরকারের কোনও হুমকি-ধমকি অথবা তাদের কোনও ভয়-ভীতিতে চিন্তিত হবেন না। আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে ভয়ভীতি মোকাবিলা করুন। যে বা যারা আপনাকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করতে চায়, তাদের চিহ্নিত করুন।”

তিনি বলেন, “‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানাতে চাই— ভাতা কার্ড জব্দ করে কিংবা ভাতা বন্ধ করে দিয়ে কিংবা আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করার অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত হবেন বা হচ্ছেন, ভবিষ্যতে তাদের আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।”

মঈন খান বলেন, “আমরা বলতে চাই, এই একদলীয় বাকশালী সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাই তাদের অন্যায় ও অবৈধ হুমকিকে পরোয়া করার আর কোনও কারণ নেই।”

তিনি বলেন, “সর্বজনীন ভোট বর্জনের মাধ্যমে চলমান আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও অংশগ্রহণে একদলীয় শাসনের কবল থেকে বাংলাদেশের মানুষ শিগগিরই মুক্তি পাবে– এই প্রত্যাশা আমরা ব্যক্ত করছি। ইনশাল্লাহ, আমরা দেশের এই অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী সরকারকে একটি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় হটিয়ে দিয়ে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার পুনরায় প্রতিষ্ঠা করব।”

তিনি বলেন, “সরকার ভাবছে ৭ জানুয়ারি তাদের জয়লাভের দিন। আমি বলব, ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের পরাজয়ের দিন। কারণ সেদিন তারা বাংলাদেশের নতুন করে অপমৃত্যু ঘটাবে।”

মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই ভোট হয়ে গেছে মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, “ভোট তো যেদিন মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে, ৩০ নভেম্বর, সেদিনই হয়ে গেছে। মানুষ ভোট চুরি করে, ভোট রিগিং করে গোপনে…আর আজকে ভোট-চুরি ভোট রিগিং হয় প্রকাশ্যে, এর চেয়ে বড় লজ্জার কথা তো হতে পারে না। আজকে যেকোনো লোককে জিজ্ঞাসা করুন, তারা বলে দেবে কোন আসনে কে আসবে।”

তিনি বলেন, “৭ তারিখে কিসের ভোট? ৭ তারিখে একটা ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচন তো হয়েই গেছে। সরকারের এই ভাওতাবাজী, ধাপ্পাবাজী, ভুয়া নাটক, তামাশা আমরা ল্যাজিটিমাইজ করবে না। সেই কারণেই আমরা এটা প্রত্যাখান করেছি। এটা ইলেকশন না, এটা সিলেকশন।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ভোট ঘিরে শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা হরতাল ডেকেছে বিএনপি। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সেলিমা রহমান বলেন, “দেখুন হরতাল মানে কী? আমাদের প্রতিবাদ। আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে যতখানি সম্ভব তারা করবে।”

তিনি বলেন, “আজকেও খবরের কাগজে এসেছে, সহিংসতায় দুইজন মারা গেছে…এটা প্রতিদিন ঘটছে। এখন ওদের (সরকার) একটাই লক্ষ্য– আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে হোক দায় চাপানো। আমরা সেটা হতে দেব না। আমরা জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছি, আপনারা হরতাল পালন করুন, এই নির্বাচন বর্জন করুন। আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে। আমাদের প্রতিবাদটা জাতির কাছে জানালাম, বিশ্বের কাছে জানালাম এবং জাতিও আজকে এর প্রতিবাদ করছে।”

জনগণের কাছে এই নির্বাচন একটা ‘প্রহসন’ এমন মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এটা অর্থহীন নির্বাচন, যেটাতে দয়া করে কেউ জড়িত হবেন না। কারণ এটা একটা অপরাধমূলক তৎপরতা, এটাতে জড়িত হওয়াও অপরাধ। আমরা শুধু শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই বর্জন করার আইনগত অধিকার আমার কাছে। এই বর্জন যারা করবে তারা আমাদের আহ্বান শুনবে। এর বাইরে অন্য যা করবে সেটা তাদের (সরকার) হুকুমে করবে, আমাদের হুকুমে না।’ 

তিনি বলেন, “লড়াই চালিয়ে যেতে হবে প্রকৃত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। ইনশাল্লাহ, আমরা যেমন দেশকে স্বাধীন করতে পেরেছি তেমনি এদেশে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বাকশালের কবরস্থানের ওপরে আমরা যেমন বাগান রচনা করেছিলাম, আবার আমরা করতে পারব ইনশাল্লাহ।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত