নতুন করে তদন্ত হলে ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের’ আসল রহস্য উন্মোচিত হবে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির প্রত্যাশা অন্তর্বর্তী সরকার নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে এই ঘটনার তদন্ত করবে। যেখানে প্রয়োজন হলে সহযোগিতাও করবে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া এই হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ঘোষণার পরদিনই নিজেদের অবস্থান জানাল দলটি।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হৃদয় বিদারক। এই পুনঃতদন্তে সেই রহস্য উন্মোচিত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আশা-আকাংখাকে ধারণ করেছিল, প্রত্যেকটি আন্দোলনে-সংগ্রামে জনগণের সাথী হয়ে তাদের আশা-আকাংখার প্রতিফলন ঘটিয়েছিল। কিন্তু সেই সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার জন্যই প্রাথমিক পদক্ষেপ হলো এই বিডিআর হত্যাকাণ্ড।
“আমরা আশা করব, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্মোহভাবে নিরপেক্ষভাবে এই ঘটনার তদন্ত করবে এবং বিচারের কাজ দ্রুত শুরু করবে।”
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে চালানো হামলায় বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা এবং পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১৭ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়।
পরবর্তীতে এ ঘটনার বিচার করে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালতে হত্যা মামলার রায় হয়। যেখানে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ১৫২ জনকে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান ১৬০ জন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২৫৬ জনকে।
এই বিচারে অনেক নিরীহ মানুষ দণ্ডিত হয়েছেন দাবি করেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক দোষী ব্যক্তি শাস্তির আওতার বাইরে চলে গিয়েছে। তারপরেও গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনার রহস্য উন্মোচনের উদ্যোগ নেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
অল্প সময়ের মধ্যে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু পরিণতি ও বিচার দেখতে চান বলে প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। সেজন্য সরকারকে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।
পুনঃদন্তের কোনও সরকারকে বিএনপি কোনও সময়মীমা বেঁধে দেবে কিনা জানতে চাইলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, “আমরা প্রয়োজনীয় সময় দিতে চাই এই তদন্ত কমিটিকে। আমরা আশা করি দ্রুত তারা তদন্ত কাজ এবং বিচারের কাজ সম্পন্ন করবে। সময়সীমা বেধে দেওয়া অত্যন্ত মুশকিল।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ এবং অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।