বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের সব ধারা না পড়েই বিএনপি অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
তিনি বলেন, তারা ধারাগুলো খণ্ডিতভাবে তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বিষয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমঝোতা স্মারক কোনোভাবেই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, বরং এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। বিএনপি অপপ্রচার করছে যে, বাংলার বুক চিরে ভারতের ট্রেন চললে, বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে। এটি মোটেই সঠিক নয়।”
এসময় সমঝোতা স্মারকের তিন ও চার নম্বর ধারা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, তিন নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘রেড ট্রাফিক’ তথা অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকসহ বিপজ্জনক ও আপত্তিকর পণ্য পরিবহন করা যাবে না। চার নম্বর ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য ও মানুষের চলাচল সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় আইন, প্রবিধান ও প্রশাসনিক বিধানের অধীন হবে।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, “বিএনপি এটা বলে না যে- ভারতের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন নেপাল ও ভুটান পর্যন্ত চলবে, নেপাল-ভুটান থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রেন বাংলাদেশে আসবে এবং কলকাতা বন্দর ব্যবহার না করে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে। তারা এটাও বলে না যে-ভারতের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুত গ্রিডের মাধ্যমে তাদের ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে ভারতের বুক চিরে বাংলাদেশ নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে।”
এসময় ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়ে নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশের পক্ষে রায় আনা, চীনা সাবমেরিন যুক্ত করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি ও ছিটমহল সমস্যার সমাধান করে ১০ হাজার একর জমি বাংলাদেশের মধ্যে সংযুক্ত করা।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জন্য ভারতকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাপের মধ্যে রেখেছেন মন্তব্য করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই চুক্তি হলেও তার হাত ধরেই হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে তাদের কোনও চিন্তা ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।”
বিএনপির রাজনীতির নানা সমালোচনাও করেন প্রতিমন্ত্রী।
দলটির নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের বিবেক নতজানু, যে কারণে আপনারা নিজেরা যা করতে পারেননি, এমনকি কোনও উদ্যোগও নেননি- সেগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্জন থাকা সত্ত্বেও নির্লজ্জের মতো সমালোচনা করছেন।
“আপনাদের সততার মানদণ্ড নতজানু, যে কারণে আপনারা ডাহা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে প্রতিনিয়ত ধোঁকা দেন ও বিভ্রান্ত করেন।”