চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আলোচিত সাবেক আহ্বায়ক মো. আসলাম চৌধুরী মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
সোমবার শুনানি শেষে আসলাম চৌধুরীর জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের দায়ের করা আপিল খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই আদেশের পর মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পান।
২০১৬ সালে আসলামের সঙ্গে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির একটি ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ওই বছরের ১৫ মে ঢাকার ক্ষিলখেত এলাকা আসলাম চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-উত্তর)।
এরপর তার বিরুদ্ধে দুদক, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২০টি সহ ৮৬টি মামলা করা হয়। আটবছর জেলে থাকার পর তিনি মুক্তি পেলেন।
কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, “আসলাম চৌধুরী সব মামলায় জামিনে আছেন। সর্বশেষ আপিল বিভাগের সোমবারের আদেশের পর তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হন।”
সকালে কারা ফটকে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীরা আসলাম চৌধুরীকে ফুলের মালা বরণ করে। এসময় নেতাকর্মীদের সেখানে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।
সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বলা হয়, আসলাম চৌধুরী ২০১৬ বছরের ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহির্ভূত রাষ্ট্র ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
পরে ওই মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদ গঠন করেই বিএনপির রাজনীতিতে আসেন আসলাম চৌধুরী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এর আগে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব হন।
