মাসখানেক আগেই ঢাকার মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খাল ও সড়কের জায়গা দখল গড়ে ওঠা আলোচিত পশুর খামার সাদিক অ্যাগ্রোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এরপর বেশ কিছুদিন জায়গাটি খালি পড়ে ছিল। তবে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে অনেকটা রাতারাতিই সেই জায়গায় গড়ে তোলা হয় একটি রাজনৈতিক কার্যালয়, যেখানে টানিয়ে দেওয়া হয় বিএনপির সাইনবোর্ড।
দখলের সংস্কৃতি ফিরে আসায় বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে খালপাড় দখল করে গড়ে তোলা বিএনপির সাত মসজিদ হাউজিং ইউনিট কার্যালয়ের ছবি। গণমাধ্যমগুলোতেও প্রকাশ হয় প্রতিবেদন।
এ খবর চলে যায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়েও।
দলের কয়েকজন নেতা সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন, বিএনপির সাতমসজিদ হাউজিং ইউনিটের নামে জমি দখল হওয়ার খবর প্রকাশ হলে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।
পরিস্থিতি সামাল দিকে বুধবার দুপুরে রামচন্দ্রপুর খাল পাড়ে যান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক।
খালের জায়গায় গড়ে তোলা রাজনৈতিক কার্যালয়টি দেখে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি। পরে তার উপস্থিতিতেই উচ্ছেদ করা হয় কার্যালয়টি।
অবশ্য শুধু বিএনপির সাইনবোর্ডযুক্ত রাজনৈতিক কার্যালয়ই নয়, খালের দখলমুক্ত হওয়া জায়গায় বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘর নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন স্থানীয় দখলদাররা।
এরই মধ্যে অন্তত ২০টি ঘর নির্মাণের জন্য বাঁশের কাঠামোও তৈরি করা হয়েছিল।
তবে বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযানের মুখে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘরের জন্য তৈরি করা বাঁশের কাঠামোগুলোও সরিয়ে নেন দখলদাররা।
রামচন্দ্রপুর খাল ও সড়কের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা করছিল সাদিক অ্যাগ্রো। ‘ছাগলকাণ্ডে’ খামারটি আলোচনায় আসার পর গত ২৭ জুন এর অবৈধ অংশ উচ্ছেদে অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
এই খামারেই ছিল গত কোরবানির ঈদের আগে আলোচনায় আসা ‘উচ্চ বংশীয়’ ছাগলটি। ৬২ ইঞ্চি উচ্চতা, ১৭৫ কেজি ওজনের ছাগল সচরাচর দেখা যায় না। সাদিক এগ্রো ছাগলটির দাম হাঁকে ১৫ লাখ টাকা। এত দামের পেছনে ব্যাখ্যা ছিল উন্নত জাত ও বংশ মর্যাদা।
সেই ছাগল কিনতে গিয়ে ভাইরাল হন তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত। সেই ছাগলের রশি ধরে টান পড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের, যখন জানা যায় এই তরুণ তারই ছেলে। ছেলের ছাগলকাণ্ডের পর সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এনবিআরের পদ হারিয়েছেন মতিউর। তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন।