Beta
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

১০৯ দিন পর মুক্তি পেলেন ফখরুল  

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাকে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাকে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা।
[publishpress_authors_box]

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগার থেকে ১০৯ দিন পর মুক্তি পেলেন। আর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মুক্তি পেলেন ১০৫ দিন পর।

ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটক দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩.৪০ মিনিটে ফখরুল ও এর একটু পর খসরু বের হন। দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সকাল সন্ধ্যাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “মহাসচিবের সঙ্গে উনার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে তার ছেলে ইসরাফিল খসরু আছেন। তারা বাসার দিকে যাচ্ছেন।”

শীর্ষ দুই নেতা মুক্তির পর কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীরা করতালি ও ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দিয়ে তাদের বরণ করেন। তখন তাদের মুখে ছিল বিভিন্ন স্লোগান।

সাদা রঙের গাড়ি থেকে নেতাকর্মীদের হাত তুলে অভিবাদন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ সব সময় গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। ইনশাল্লাহ এই সংগ্রামে তারা জয়ী হবে।”

মুক্তি পাওয়ার পর বাসার দিকে যাচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তবে এখনও কারাগারে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদুসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের বুধবার বিএনপির এ দুই জ্যেষ্ঠ নেতার জামিন মঞ্জুর করেন। এই মামলার জামিনের আগে আরও ১০টি মামলায় তাদের জামিন হয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। পরে তাকে ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

সেদিন রাত ৮টার পর ফখরুলকে আদালতের হাজতখানায় নেয় পুলিশ। পরে তাকে রমনা থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে রাখার আবেদন করে পুলিশ।

অন্যদিকে মির্জা ফখরুলের জামিন চেয়ে তার আইনজীবীরা আদালতে আবেদন করেন। তবে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন।

সবমিলিয়ে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ কন্সটেবল হত্যা ও নাশকতাসহ ১১টি মামলা দেখানো হয় রমনা ও পল্টন থানায়।

গ্রেপ্তার করার দিনই রাত ১০টার পর তাকে আদালত থেকে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে গত ২ নভেম্বর বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ আবারও জামিন আবেদন করেন।

সেখানে জামিন না মিললে গত ৩ ডিসেম্বর হাই কোর্টে আপিল করা হয়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে রুল দেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এরপর গত ১০ জানুয়ারি হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে দেওয়া রুল খারিজ করে দেন। ফলে তখন উচ্চ আদালতে একই মামলার ১০ আসামির জামিন ও ৬ আসামির আগাম জামিন হলেও জামিন পাননি বিএনপি মহাসচিব। তবে সেদিন পৃথক ৯টি মামলায় সিএমএম আদালত এবং পরবর্তী সময়ে অন্য আরেকটিসহ ১০ মামলায় জামিন পান তিনি।

তবে বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় বারবার তার জামিন আবেদন নাকচ করা হচ্ছিল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মুক্তি পেলেন ১০৫ দিন পর।

এদিকে গত ২ নভেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সদ্স্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানে তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নাশকতা, পুলিশ-হত্যা ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা ও পল্টন থানায় ১০টি মামলা হয় খসরুর বিরুদ্ধে। তিনিও ৯টি মামলায় জামিন পেলেও বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় জামিন পাচ্ছিলেন না।

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মির্জা ফখরুলসহ ৫৯ বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করা হয়।

এ মামলায় ফখরুল ছাড়াও আসামি হওয়া উল্লেখযোগ্য বিএনপি নেতারা হলেন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত