Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

কোটা আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি।
Picture of সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

কোটা আন্দোলনের মধ্যে শত শত নিরীহ শিক্ষার্থী হতাহত হয়েছে, অথচ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন শুধু ছয় জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে, যা পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার নামান্তর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।  

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিএনপির এ অভিমত তুলে ধরেন দলের মহাসচিব।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের আপামর শিক্ষার্থীদের যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের মানুষদের এখনও নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে (যিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন) সানিয়াতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গতরাত (বুধবার) ১টায় বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের অব্যাহতভাবে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।  

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার কিংবা নেতাকর্মীদের বাসায় না পেয়ে তাদের সন্তান কিংবা বাসার সদস্যদের গ্রেপ্তার ও অশালীন আচরণসহ বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হচ্ছে।

“আন্দোলনে ভূমিকা রাখার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য দোষারোপ করছে। যদি তাই হয়, তাহলে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন?  এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই আন্দোলনের সাথে জড়িত নয়।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা উদ্ঘাটনে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নাগরিকদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। বুধবার সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিশনের প্রধান হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

এ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হতাহত করল, অথচ সরকারের ইশারায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র ছয় জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে, যা সুকৌশলে পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ারই নামান্তর। তাই জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। নইলে ব্যর্থতার সকল দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিৎ বলে জনগণ মনে করে।

“কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ও আনসার সদস্য যারা নিহত হয়েছেন, তাদের জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২ লাখ নগদ টাকা, ৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র করে প্রদান করা হয়েছে, অথচ শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাখির মতো গুলি করে গণহত্যা করা হলো, যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি করছি।

“একইসঙ্গে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াতের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত