সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কারের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দায়মুক্তি পেতে পারে বলে মনে করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান চৌধুরী দুদু।
এই হত্যাকাণ্ডের বিচার, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ সাংবাদিকদের সব দাবিতে তার দলের সমর্থনের কথাও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল।
সাংবাদিকদের জাতির বিবেক উল্লেখ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “সেই বিবেককে যদি মুক্ত না করা হয়, কালা কানুন যদি বাতিল করা না হয়, তাহলে দেশের প্রকৃত পরিস্থিতি এটি তুলে ধরা সাংবাদিকদের জন্য খুব কঠিন। এই সরকারের কাছে সাংবাদিকরা যে দাবি জানিয়েছে, আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সেটি সমর্থন করছি।”
তিনি বলেন, “সাগর-রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যে সরকারের সময় হত্যা করা হয়েছিল, সেই সরকারের অনেক প্রিয়ভাজন ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অনেক মানুষ মনে করে। এ কারণে দীর্ঘ সময় এই হত্যাকান্ডের তদন্ত হয়েছে, কিন্তু চার্জশিট দেওয়া হয়নি।
“এখন এই সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) দায়মুক্তির সময়। যদি তারা এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায়, তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার। তারা বলেছে, এটি তারা করবে। আমরাও বিশ্বাস করি এটি তারা করবে। কিন্তু সময় থাকতে তা শেষ করতে হবে।”
যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এটিকেই সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।
এসময় বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, “সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ যেসকল হত্যাকাণ্ড হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে আমার এখানে দাঁড়িয়েছি। সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন করতে হবে। মুক্তভাবে সাংবাদিকতা করার সুযোগ করে দিতে হবে।”
যে সাংবাদিকরা আগের সরকারের নানা অপকর্মে সমরাথন দিয়েছে তাদেরও বিচার চান বলে জানান এই সাংবাদিক নেতা।
কবি হাসান হাফিজ বলেন, “এখনও কালা কানুনগুলো দূর হয়নি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এখনও নিরঙ্কুশ হয়নি, নিশ্চিত হয়নি। অনেক সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। সেগুলোর বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
“কালাকানুনগুলো যেন রোধ করা হয়, সাগর-রুনির প্রকৃতি খুনিদের যেন চিহ্নিত করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।