বগুড়ার শেরপুরে তেলের দোকান আগুন লেগে নিহত লরির সহকারীর মরদেহ মালিকপক্ষ গোপনের চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত শনিবার ১ জুন রাতের ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলে মারা যান ৩২ বছর বয়সী রহমত আলী। তিনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বোংগাবাসর গ্রামের আশান সরদারের ছেলে।
পুলিশ বলছে, তার মৃত্যুর খবরটি দোকানের মালিকপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে বগুড়ার শেরপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। এর আগে মরদেহ বহনকারী ট্রাকের চালক ও সহকারী দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তারা হলেন- ট্রাক চালক আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও তার সহকারী শিপন (২৫)।
গত শনিবার দিবাগত রাতে শেরপুর পৌর শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় জিন্নাহর গ্যাস ও তেলের দোকানে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে তেলের দোকানের মালিক রফিকুল ইসলাম জিন্নাহ পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে তেলবাহী লরি থেকে তেল নামিয়ে জিন্নাহর দোকানে মজুদ করা হচ্ছিল। এ সময় বিস্ফোরণ হলে দোকানে আগুন লাগে। ঘটনাস্থলেই লরির সহকারী রহমত আলী মারা যান। দগ্ধ হন দোকানের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী। এ সময় দোকানের মালিক জিন্নাহসহ অন্যরা নিরাপদে সরে যান। দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণ হলে দোকানের মালিক লরির চালকসহ গাড়ি নিয়ে চলে যান কাউকে না জানিয়ে। দোকানের কর্মচারী শহিদুল ও আছের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
পরদিন দোকান পরিষ্কার করতে গিয়ে মানুষের হাড়, চামড়া দেখতে পান কর্মচারীরা। বিষয়টি তারা গোপন রেখে রাতে কিছু টাকাসহ রহমত আলীর মরদেহ একটি ট্রাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহসহ ওই ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। পরে তাদের বগুড়ার শেরপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
নিহতের বড় ভাই রফিকুল হাসান বলেন, “১ জুন আমার ছোটভাই রহমত মারা যায়। তখন আমাদের এলাকার হারুন ও ফরিদ নামের দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহমতের মরদেহ শাহজাদপুরে পাঠিয়ে দেয়। তবে আমাদের বাড়ি না এসে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মরদেহ নিয়ে যান ট্রাক চালক। পরে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে জানাজানি হয়।”
শেরপুর থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, সোমবার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছে। ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করা হয়েছে।