বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস ও অটোরিকশা খালে পড়ে প্রাণ হারানো ৯ জনের ৭ জনই মাদারীপুরের। তারা একটি বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন।
নিহত ৭ জন শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ইউনিয়নের সাহাপাড়া এলাকার সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুবর রহমান সবুজের পরিবারের সদস্য।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে আমতলীর চাওড়া ও হলদিয়া হাটের সঙ্গে সংযুক্ত লোহার সেতু গাড়িসহ ভেঙে খালে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজের খালাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তারা। পথে দুর্ঘটনায় তার পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, মাহাবুবুরের মা ফরিদা বেগম (৪০), ভাই সোহেলের স্ত্রী রাইতি (৩০), শাশুড়ি রুমি বেগম (৪০), মামী মুন্নি বেগম (৪০), মামার সন্তান তাহিয়া (৭), তাসদিয়া (১১), আরেক মামী ফাতেমা বেগম (৪০)।
এছাড়া এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়ার জহিরুল ইসলামের স্ত্রী জাকিয়া এবং কন্যা রিদি (৫)।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত বুধবার সকালে শিবচর থেকে মাহাবুবুর ও তার পরিবারের সদস্যরা খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরগুনায় যায়। শনিবার আমতলির হলদিয়া গ্রাম থেকে কনের বাড়ির লোকজন মাইক্রোবাস ও অটোরিকশায় পৌর এলাকার নতুন বাসস্ট্যান্ডে ছেলের বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিল। পথে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস ও একটি অটোরিকশা ঝুঁকিপূর্ণ লোহার ব্রীজ ভেঙে খালে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনার খবর মাদারীপুরের গ্রামের বাড়িতে এলে সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে এসে ভিড় জমায় মাহাবুবুর রহমান সবুজের বাড়িতে।
সেখানে দুলাল মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি বলেন, “পুরো গ্রাম শোকে স্তব্ধ। আমরা খবর পেয়ে মাহাবুবের বাড়িতে এসেছি। ওদের পরিবারের সবাই ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। এখন কেউ বাড়িতে নেই।”
ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বেপারী বলেন, “আমরা খবর পেয়ে এই বাড়িতে এসেছি। এত বড় দুর্ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। এখন তাদের মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে বলে শুনলাম।”
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।
লাশ নিয়ে অন্যরা বাড়ির পথে রওনা হয়েছে জানিয়ে শিবচর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা সিদ্দিকা বলেন, রবিবার সকালে লাশ দাফন করা হবে।
