Beta
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

এত ছক্কার রহস্য ছোট বাউন্ডারিতেই !

ctg stadium
[publishpress_authors_box]

নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামের স্ট্রেইট বাউন্ডারি মাত্র ৫৫ মিটারের। ওই মাঠে ক্রিকেটের চেয়ে বেশি হয় রাগবি। তাই লম্বায় মাঠটি ছোট হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু মিরপুর বা সিলেটে তো এই অবস্থা নয়। এই মাঠগুলো তৈরিই করা হয়েছে ক্রিকেটের জন্য। তাহলে এই মাঠগুলোতে ৫৫ মিটারের বাউন্ডারী থাকবে কেন!

সিলেটে শুরুর দিকের ম্যাচে টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গেছে এক ম্যাচে একটি ছক্কা মাত্র ৫৫ মিটারের হয়েছে। কিন্তু সিলেটের এক গ্যালারি থেকে উল্টোদিকের গ্যালারি পর্যন্ত মাঠের পরিমাপ লম্বায় ১৪৫ মিটার ও পাশে ১৩৫। আর মিরপুরে লম্বায় ১৮৬ মিটার এবং পাশে ১৩৬ মিটার।

পিচের দুই প্রান্ত পরিমাপ করা হলে লম্বায় অনায়াসে ৭০ মিটারের বাউন্ডারি দেওয়া যায়। কিন্তু এবারের বিপিএলে দুই মাঠেই সেটা ছিল মাত্র ৫৫-৫৭ মিটার।

অদ্ভুতুড়ে এই পরিমাপ কিভাবে হলো তা কেউ বলতে পারছে না। বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার আবদুল বাতেন এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। একই ভাবে সিলেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাস এ ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ, কারণ কথা বলার এখতিয়ার তার নেই।

বিপিএলে সর্বোচ্চ ১৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন রংপুর রাইডার্সের পাকিস্তানী অলরাউন্ডার খুশদীল শাহ। ছবি : রংপুর রাইডার্স

এবারের বিপিএলে গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব হিসেবে আছেন নাজমুল আবদীন ফাহিম। বাউন্ডারি কিভাবে ছোট হলো সে ব্যাপারে এই পরিচালকেরও নাকি কোন ধারণা নেই। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেছেন, “এটা আসলে কোন জায়গা থেকে নির্দেশনা গিয়েছে, আমি বলতে পারবো না। তবে আমার দিক থেকে এরকম কিছু পরামর্শ যায়নি। বিসিবি থেকেও এমন কিছু নির্দেশনা যাওয়ার কথা নয়।” তার কথা অনুযায়ী সদস্য সচিবও নির্দেশনা দেননি, বিসিবিও দেয়নি। এদেরও ওপরেও কী কিছু আছে !

তবে ফাহিমের দাবি আগের চেয়ে বিপিএলের বাউন্ডারির মাপ বেড়েছে, “বাউন্ডারি ছোট হওয়ার বিষয়টা নজরে আনার মতো। আমি সিলেটে ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা জানিয়েছে বাউন্ডারি দূরত্ব শুরুর দিকের চেয়ে বেড়েছে।”

বাউন্ডারি ছোট থাকায় এবার রান বেশি হচ্ছে। ছক্কাও হয়েছে বেশি। এখন পর্যন্ত হওয়া ২০ ম্যাচে এসেছে ৩৪২টি ছক্কা। বাউন্ডারির মাপ কমে যাওয়ায় রানাও বাড়ছে এবং দুইশো তাড়া করে জয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

রান বেশি হওয়ায় এবারের বিপিএল ইতিবাচক আলোচনায় আছে। তবে বাউন্ডারি ছোট থাকাটা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন ফাহিম, “এটা ঠিক সববারের চেয়ে এবার রান বেশি হয়েছে। শুধু তাই না, বড় রান তাড়া করে জয়ের নজিরও এসেছে অনেকগুলো। সেদিক থেকে এবারের বিপিএল ভালো হচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে কোন আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করেই করা উচিত। তাছাড়া বিপিএলের বাইলজেও আছে যে বাউন্ডারির সীমানা ৬৫ মিটার রাখতে হবে।”

দেশি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬টি ছক্কা এসেছে ইয়াসির আলি রাব্বির ব্যাট থেকে। ছবি : দুর্বার রাজশাহী

১৬ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে বিপিএলের তৃতীয় পর্ব। ঢাকা-সিলেটের মতো চট্টগ্রামেও কি বাউন্ডারি ছোট থাকছে?

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু বলছেন সেরকম নির্দেশ আসেনি, “এই মাঠে সবসময় ৬৫ থেকে ৭০ এর মধ্যে বাউন্ডারি রাখা হয়। এটাই আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বেও এটাই থাকবে। আমাকে বাউন্ডারি কমানোর ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।”

বাউন্ডারি ছোট থাকলে ব্যাটাররা রান বেশি পাবেন, নিজের নামে ছক্কার সংখ্যাও বাড়িয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়ে সেই শটগুলো থাকবে বাউন্ডারি সীমানার ভেতর এবং একই সঙ্গে থাকবে আউট হওয়ার শঙ্কাও।

বিপিএলে এবার বাউন্ডারি ছোট থাকায় ভুল আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন ব্যাটাররা। তবে নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুর কথা অনুযায়ী সেই ভুল মাপ আর থাকছে না চট্টগ্রামে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত