এক সময় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত সদস্য মুমিনুল হক এখন পুরোদস্তুর টেস্ট ক্রিকেটার। ওয়ানডে ফরম্যাট নিয়মিত খেলছেন তবে সেটা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের একমাত্র লিগ বিপিএলে সুযোগ হয় না তার।
মুমিনুল তাই এবারের বিপিএলেও ডাক পাননি কোনো দলে। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের। হঠাৎ ডাক এল রংপুর রাইডার্স থেকে। টেস্টের অনুশীলন ছেড়ে তাই মুমিনুল চলে এলেন বিপিএল খেলতে। সবশেষ ২০১৯-২০ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে খেলেছিলেন মুমিনুল। গত তিন মৌসুমে কোন দল তাকে নেয়নি।
বুধবার রাতে মুমিনুলকে এবারের বিপিএলে ড্রাফটের বাইরে থেকে দলে নেয়ার ঘোষণা দেয় রংপুর রাইডার্স। বৃহস্পতিবার বসুন্ধরায় রংপুরের অনুশীলন মাঠে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন মুমিনুল। টেস্টের অনুশীলন থেকে টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংয়ে মানিয়ে নেওয়াটা শুরুতে একটু কঠিন ছিল এই ব্যাটারের জন্য।
সেই অবস্থাটা পাশে রেখে রংপুরে ডাক পেয়ে স্বস্তির কথা জানালেন মুমিনুল, ‘‘শ্রীলঙ্কা সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। লাল বলের অনুশীলন করছিলাম মিরপুরে, আবার মাসকোতে করেছি। বিপিএল দেখেছি যতটুকু দেখার। খেলতে না পারায় ওই রকম খারাপ লাগেনি যে হতাশ হয়ে যাব। একটু খারাপ লাগা ছিল কারণ এরকম টুর্নামেন্টে তো সবাই খেলতে চায়। এখন সুযোগ পেয়েছি, একাদশে সুযোগ পেলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।’’
দলে ডাক পেলেও একাদশে মুমিনুল থাকবেন কিনা তা এখনও জানেন না। রংপুরের বাবর আজম, ব্র্যান্ডন কিং, আজমতুল্লাহ ওমরজাই দল ছেড়ে যাওয়ায় ব্যাটিং দুর্বল হয়ে পড়েছে রংপুরের। তাই মুমিনুলের মতো অভিজ্ঞ একজনকে নিয়েছে দলটি।
একাদশে থাকলে রংপুরের আস্থার প্রতিদান দিতে চান এই ব্যাটার, ‘‘আমি জানি না খেলবো কি খেলবো না। এটা টিম ম্যানেজমেন্ট জানে। খেললে তখন আমাকে আমার দায়িত্বটা বলে দেয়া হবে। আমি এদেশের ভালো ক্রিকেটার হয়েও খেলতে পারছি না। এটা নিয়ে আফসোস করার কিছু নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট এমন একটা জায়গা যেখানে আপনি সবসময় সুযোগ পাবেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো ওই সুযোগটা কাজে লাগানো।’’
টেস্টে ভালো ব্যাট করেন বলে টেস্ট ক্রিকেটারের ট্যাগটা লেগে গেছে তার। নয়তো সব ফরম্যাটেই এক সময় জাতীয় দলে নিয়মিত ছিলেন। ২০১২ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া মুমিনুল ২০১৫ বিশ্বকাপ দলে ছিলেন। ২০১৮ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার পর এই ফরম্যাটে আর ডাক পাননি। ২৮ ওয়ানডেতে তিন ফিফটিতে তার রান ৫৫৭।
টি-টোয়েন্টিতে খুব কমই সুযোগ পেয়েছেন। ২০১২ সালে অভিষেকের পর ২০১৪ পর্যন্ত দুই বছরে মাত্র ৬ ম্যাচ খেলে করেছেন ৬০ রান। তবে টেস্টে দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটার হয়ে উঠেছেন মুমিনুল। এখন পর্যন্ত ৫৯ ম্যাচে ৩৮৮৩ রান করেছেন ১২টি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফসেঞ্চুরিতে। সাদা পোষাকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বাংলাদেশিদের তালিকায় চারে আছেন এই ব্যাটার।