২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পারফর্ম করতে না পারায় সমালোচনায় পড়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তখন বিদ্রুপ ছিল – ‘‘অধিনায়ক কোটায় খেলেছেন তিনি’’। অথচ ওই সময় অনেকটা ফিট ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
এই বিপিএলে আবার একই বিদ্রুপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সিলেট স্ট্রাইকার্সে শুধু অধিনায়ক হয়েই খেলছেন মাশরাফি। ফিটনেস একেবারেই নেই, প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছেন কোনও অনুশীলন ছাড়া। এ কারণেই হচ্ছে হাসি-ঠাট্টা। অবশ্য ‘আনফিট’ মাশরাফির খেলা নিয়ে কোনও সমালোচনাই গায়ে মাখছে না সিলেট স্ট্রাইকার্স।
দলটির কোচ রাজিন সালেহও সকাল সন্ধ্যাকে একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সে (মাশরাফি) একটা দলকে মাঠে ও মাঠের বাইরে গুছিয়ে রাখতে পারে। আমরা ওর এই জিনিসটা নিতে চাচ্ছি। আমি শুধু না সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকপক্ষও তাকে মাঠে চায়। এজন্য বাইরে কী সমালোচনা হচ্ছে। মাশরাফির ফিটনেস নিয়ে কি হাসাহাসি হচ্ছে— এসব একদমই কানে নিচ্ছি না আমরা। তার অধিনায়কত্ব আমাদের দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটাই আমরা সামনে রাখছি।’’
মাশরাফির সাবেক সতীর্থ রাজিন যোগ করেন, “মাশরাফির তো প্রথম ম্যাচে বোলিং করারই কথা ছিল না। তবুও সে বল করেছে এবং সেরা বোলারদের থেকেও ভালো বল করেছে। শেষ তিনটা বল তো ধরা যাবে না, কারণ ওই সময় ম্যাচ এমনিতেই হাত থেকে চলে গেছে।’’
‘‘আমরা কখনোই ভাবি না যে ফুটবলের মতো ১০ জন নিয়ে খেলছি। মাশরাফি যে মাপের নেতা, তার নেতৃত্বটাই তো একটা দলকে বদলে দেয়। সে ব্যাট করতে পারে, বল করতে পারে, দলকে নেতৃত্ব দিতে পারে। তিনটা জিনিস তার থেকে পাচ্ছি, তাহলে কেন তাকে আমরা রাখব না।’’
অথচ রবিবারও পুরোদমে অনুশীলন করতে পারেননি মাশরাফি। অনুশীলনে ছিলেন কিন্তু বোলিং করেননি। ব্যাট-প্যাড নিয়ে গিয়েছিলেন নেটে। কয়েক বল ব্যাট করার পর পায়ে ব্যথা অনুভূত হওয়ায় উঠে যান। এই অবস্থায় মঙ্গলবার দেড়টায় রংপুরের বিপক্ষে মাশরাফির ক্রিকেট খেলাটাই তো ঝুঁকিপূর্ণ।
সিলেট কর্তৃপক্ষ তবুও ‘‘অধিনায়ক’’ মাশরাফিকে চায়। রাজিন জানালেন, ‘‘ফিটনেস এটা ইস্যু অবশ্যই। বিপিএলের মতো আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্টে ভালো ফিটনেস জরুরি। একইসঙ্গে পারফরমও জরুরি। দেখেন উইন্ডিজের যে ক্রিকেটাররা ওদের ফিটনেস কি খুব ভাল মানের? তেমন না কিন্তু। তবুও টি-টোয়েন্টিতে ওদের চাহিদা আকাশচুম্বী। ওরা ব্যাপারটা ওই রকমভাবে তৈরি করেছে। তেমনি মাশরাফির যে নেতৃত্বগুণ সেটা বাংলাদেশে আর কোথাও কি পাওয়া যাবে?’’
২০১৯ বিশ্বকাপে মাশরাফির নেতৃত্বে মন্দের ভালো টুর্নামেন্ট কাটিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২৩ বিপিএলে এই মাশরাফির হাত ধরে প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল সিলেট। সেবার বল হাতে ১৪ ম্যাচে ১২ উইকেট ছিল তার দখলে। চলতি মৌসুমে প্রথম ম্যাচেই এক উইকেট নিয়েছেন। এবার ‘‘অধিনায়ক’’ কোটায় দলকে কতদূর নিয়ে যান সেটাই দেখার।