নতুন কোচ পেয়ে গেছে ব্রাজিল। দোরিভাল জুনিয়রের কাঁধে সেলেসাওদের দায়িত্ব। যদিও ৬১ বছর বয়সী কোচের সামনে কঠিন সব চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে কোন কৌশলে খেলাবেন দলকে? তার সাম্প্রতিক কোচিং দর্শনে নজর দিলে মাঝমাঠেরই প্রাধান্য পাওয়ার কথা।
২০২২ বিশ্বকাপও হতাশায় কেটেছে ব্রাজিলের। ব্যর্থতায় দায় নিয়ে তিতে সরে গেলে নতুন কোচের সন্ধান চলতে থাকে। সেখানে অনেক নামের ভিড়ে ‘চূড়ান্ত’ হন কার্লো আনচেলত্তি- অন্তত ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) বক্তব্য তেমনই ছিল। কিন্তু ব্রাজিল ফুটবলের কর্তাব্যক্তিরা যে ‘খালি কলসি বাজিয়ে’ গেছেন, সেটি প্রকাশ্য হয় আনচেলত্তি রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করলে।
উপায় না দেখে ব্রাজিল অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ফার্নান্দো দিনিজকে সরিয়ে স্থায়ী চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে দোরিভালকে। এই কোচের ঘরোয়া ফুটবলে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রায় ২২ বছর। তবে এবারই প্রথম জাতীয় দলের ডাগ আউটে দাঁড়াতে যাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার চাপ থাকবে আকাশছোঁয়া। চ্যালেঞ্জের সব ডালি সাজানো আছে তার সামনে।
এই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে কতটা পারবেন, সেটা সময়ের হাতে তোলা। তবে এই কোচের দর্শন আশাবাদী করে তুলতেই পারে ব্রাজিলিয়ানদের। অন্তত ব্রাজিলিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবর তেমনই। আগের কোচ দিনিজের কৌশল ছিল প্রতিপক্ষের খেলা নষ্ট করে আক্রমণ রচনা করা। সেই জায়গায় দোরিভাল হলেন উল্টো। তার দর্শন হলো, দ্রুত একত্র হয়ে আক্রমণে যাওয়া। আরেকটি দিক হলো, বল হারালে দ্রুত নিজেদের দখলে নেওয়া।
তবে দোরিভালের ফুটবল কৌশলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা মাঝমাঠ। সাও পাওলো কিংবা সবচেয়ে বেশি সাফল্য পাওয়া ফ্লামেঙ্গোতেও মিডফিল্ড-নির্ভর ফুটবল খেলিয়েছেন দলকে। গত মৌসুমে যেমন সাও পাওলোর কোপা দো ব্রাজিল জয়ের পথে তার দল মাঝমাঠের সঙ্গে সমান দক্ষতা দেখিয়েছে আক্রমণভাগ ও রক্ষণে। তবে আলাদা রসদ ছিল মাঝমাঠে। তিন মিডফিল্ডার- পাবলো মাইরা, আলিসন ও রোদ্রিগো নেস্তোর মাঝমাঠ যেমন দখলে রেখেছেন, তেমনি বলের জোগান দিয়েছেন আক্রমণভাগে।
সেই কৌশলেই ব্রাজিলে সাফল্যের খোঁজ করতে পারেন দোরিভাল। সেজন্য মাঝমাঠে অনেক বিকল্পই আছে ৬১ বছর বয়সী কোচের হাতে। ব্রুনো গুইমারায়েস, আন্দ্রেই ও দগলাস লুইজ তো আছেন, তাদের সঙ্গে ফিরতে পারেন লুকাস পাকিতা। ওয়েস্ট হাম মিডফিল্ডার অনেক দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে। তবে দোরিভাল কোচ হওয়ায় তার দরজা হয়তো খুলতে যাচ্ছে।
কারণ পাকিতার সঙ্গে দোরিভালের সম্পর্ক। ফ্লামেঙ্গোতে তারা ছিলেন গুরু-শিষ্য। পাকিতার খেলার ভক্তও এই কোচ। ২০১৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ও (পাকিতা) গোল করতে পারে, খুবই ভালো পারফর্মার। আমি বলব (কেভিন) ডি ব্রুইনা ও (লুকা) মদরিচের কাছাকাছি মানের খেলোয়াড় সে। তারা ডিফেন্সিভ ও অফেন্সিভ জায়গায় একই রকমের। শক্তি ও সামর্থ্যের মিশ্রণে ভারসাম্যপূর্ণ এক খেলোয়াড় সে।”
ব্রাজিল কোচ হিসেবে দোরিভালের প্রথম অভিযান ইংল্যান্ড। মার্চে ওয়েম্বলির এই প্রীতি ম্যাচ দিয়েই যাত্রা শুরু তার। পরের মিশন স্পেন। এরপরই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ- মিশন কোপা আমেরিকা!