প্যারাগুয়ের মাঠে নামার আগে ব্রাজিলের কোচ দোরিভাল জুনিয়র বলেছিলেন, ‘‘আমরা ২০২৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলব। ১০০ ভাগ নিশ্চিত আমি। চাইলে ভিডিও করেও রাখতে পারেন।’’
ফাইনালে খেলতে হলে আগে তো বিশ্বকাপে জায়গা পেতে হবে। সেই বাছাইপর্বে রীতিমতো ছন্নছাড়া ব্রাজিল। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে প্যারাগুয়ের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
ভিনিসিয়ুস, এনদ্রিক, রোদ্রিগো-স্বপ্নের এই ত্রয়ী প্রথমবার একাদশে খেললেন ব্রাজিলের। তাদের শুরুটা হলো দুঃস্বপ্নের মতো। অথচ কোপা আমেরিকায় এই প্যারাগুয়েকেই ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল ব্রাজিল। সেই হারের প্রতিশোধ নিল প্যারাগুয়ে। ২০তম মিনিটে একমাত্র গোলটি দিয়েগো গোমেজের।
ফল
প্যারাগুয়ে ১ : ০ ব্রাজিল
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচে এটা চতুর্থ হার ব্রাজিলের। আর বাছাইপর্বে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে এটা ছিল চতুর্থ হার। তাতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দোরিভালের দল নেমে গেছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে। লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বে প্রথম রাউন্ডে এবারই সবচেয়ে কম পয়েন্ট পেল ব্রাজিল। এর আগে ২০১০ বাছাইপর্বে প্রথম রাউন্ডের ৯ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ছিল ১৬, যা ছিল এতদিনের সর্বনিম্ন। এবার নবম ম্যাচ জিতলেও ১৩ পয়েন্টের বেশি পাবে না ব্রাজিল।
ম্যাচে ৭১ শতাংশ বলের দখল ছিল ব্রাজিলের। তারা পোস্টে শট নিতে পেরেছিল কেবল ৯টি, লক্ষ্যে ছিল এর ৩টি। সেখানে পোস্টে ৭টি শট নিয়ে ২টি লক্ষ্যে রাখে প্যারাগুয়ে, গোলও করে একটি।
কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আক্রমণভাগের ত্রয়ীতে ষষ্ঠবার পরিবর্তন এনেছিলেন দোরিভাল। কাজ হলো না তাতেও।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রোদ্রিগো, লুকাস পাকেতা, আলিসন, মার্কিনিওস, গ্যাব্রিয়েল, দানিলো, এনদ্রিকের মতো তারকারা ছিলেন প্যারাগুয়ের আসুনসিওনের মাঠে। তারপরও বিরতির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছিল, এই দলটাই ব্রাজিলের সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ কি না?
🚨🚨| GOAL: DIEGO GOMEZ WHAT A GOAL WITH THE OUTSIDE OF HIS BOOT!!
— Transfer Sector (@TransferSector) September 11, 2024
Paraguay 1-0 Brazil
pic.twitter.com/4Ryz2qacGy
২০তম মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল প্যারাগুয়ে। গাব্রিয়েল মাগালিয়াইস হেডে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে বিপদ বাড়ান দলের। বক্সের বাইরে বল পান ফাঁকায় দাঁড়ানো দিয়োগা গোমেজ। ব্রুনো গিমারেজ অনেকখানি সামনে থেকে চেষ্টা করেছিলেন বাঁধা দেওয়ার,তাতে লাভ হয়নি। বুটের ডগা দিয়ে ট্রিভেল্লা শটে লক্ষ্যভেদ করেন গোমেজ। ডাইভ দিয়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক আলিসন।
বিরতির আগে লক্ষ্যে একটাই শট নিতে পেরেছিল ব্রাজিল। সেই শটে গোল হয়নি ভাগ্য সহায় না হওয়ায়। ২৫তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের কাটব্যাক বিপজ্জনক জায়গায় পেয়ে দূরের পোস্টে শট নিয়েছিলেন গিলিয়াহমে আরানা। গোলরক্ষকের কিছু করার না থাকলেও গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন ডিফেন্ডার ওমার আলদেরেতে!
বিরতির পরপরই মার্কিনিয়োসের থ্রু বল ধরে ডি বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রোদ্রিগো। কিন্তু পেনাল্টি স্পটের কাছ নেওয়া তার শট যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৭৩ মিনিটে ভিনিসিউসের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক। ম্যাচের শেষ বেলায় ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া গেরসনের শট লক্ষ্যভ্রস্ট হলে ২০০৮ সালের পর ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় প্যারাগুয়ে।
লাতিন অঞ্চল থেকে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ ছয় দল সরাসরি জায়গা পাবে বিশ্বকাপে। সপ্তম দলটিকে খেলতে হবে প্লে অফ। প্রতিটি দল খেলবে ১৮ ম্যাচ। পয়েন্ট তালিকার পাঁচে নেমে যাওয়া ব্রাজিলের সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত নয় এখনও। কারণ সমান ৮ ম্যাচ শেষে ছয়ে থাকা ভেনেজেুয়েলার পয়েন্ট ১০, প্যারাগুয়ের ৯ ও বলিভিয়ার ৯।