প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথানুসারে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে, অর্থাৎ আগামী অর্থ বছরেই। তার আগে স্থানীয় নির্বাচন যদি হয়, তাহলে তাও হবে আগামী অর্থ বছরের মধ্যে।
দৃশ্যত সেই দিকটি বিবেচনায় রেখেই ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন কমিশনের জন্য ২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা রেখেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
এই বরাদ্দ বিদায়ী অর্থ বছরের তুলনায় তো বটেই, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বরাদ্দের চেয়েও বেশি।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ইসির জন্য বরাদ্দ ছিল ৭৯৩ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে দাঁড়িয়েছিল ৭১৬ কোটি টাকা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাস খানেক আগে এই বাজেট দিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
তার আগের বছর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ইসির জন্য ২ হাজার ৪০৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা রেখেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ওই অর্থ বছরে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে হয়েছিল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিলেও টিকতে পারেননি আট মাসও।
অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে সেই সরকারের পতনের পর গঠিত হয় ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্ত সরকার। সেই সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসাবে সোমবার দেশের ৫৪তম বাজেট প্রস্তাব করেন সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন।
সংসদ না থাকায় টেলিভিশন ও বেতার ভাষণে নতুন অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন তিনি।
বাজেট বক্তৃতায় সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।”
তিনি বলেন, “গত দেড় দশকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের উপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছি এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন, নীতিমালা, ও আদেশ সংশোধন ও সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে ইসি ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং যথাযথ তথ্য বিশ্লেষণ নিশ্চিত করতে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।”