নির্ধারিত আয়ে জীবন চলে চাকরিজীবী আলাল আহমেদের। দেশের বড় একটি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই ব্যক্তির বেতনের বাইরে আর কোনও আয় নেই। ঢাকা শহরে নিজস্ব বাড়ি বা স্থাবর সম্পত্তিও নেই। ফলে মাস শেষে বেতনের টাকা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করতে বসেন ব্যক্তিগত বাজেট করতে। পরিবার পরিজন আর দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যেও জাতীয় বাজেট ঘোষণার সময় এলে আলাল তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকেন, কোনও সুবিধা মেলে কি না, সেই আশায়। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া কতটা নৈতিক হচ্ছে, এমন অনেক বিষয় ভাবিয়ে তোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আলালের মধ্যবিত্ত মনকে।
সকাল সন্ধ্যা: প্রতি বছর সরকার বাজেট নির্ধারণ করে। এতে আপনি ব্যক্তিগতভাবে কোনও আগ্রহ পান কি না? অর্থাৎ এই বাজেট নিয়ে আপনি কোনও প্রত্যাশা করেন কি না?
আলাল আহমেদ: গণমাধ্যমের সূত্রে প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার কয়েকমাস আগে থেকেই বাজেট নিয়ে না চাইলেও চিন্তা ভাবনা করতে হয়। প্রথমত, বাজেটের মাধ্যমে সরকারের রাজনৈতিক অভিপ্রায় প্রকাশ পায়। সরকার কোন বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে, এসব বিষয় বোঝা যায় বাজেট দেখলে। এছাড়া কোন কোন পণ্যের দাম বাড়বে বা কমবে, সেগুলো প্রাত্যহিক জীবনে কেমন প্রভাব পড়বে, এসব বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে বাজেট কেমন হবে তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়।
সকাল সন্ধ্যা: বাজেটের কোন বিষয়গুলো আপনার দৃষ্টিগোচর হয়? কেন হয়? করের বোঝার চাপের কারণে বা কোনও সুবিধা পেলে?
আলাল আহমেদ: বিশেষ করে কোন কোন ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে বা কমছে। কালো টাকা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকার কেমন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে- এসব। প্রতি বছরই আয়করসহ নানাবিধ করের চাপ বাড়ছে। এতে চাপ পাড়ছে বেতনভোগী ফিক্সড-ইনকাম গ্রুপের মানুষের ওপর। ব্যক্তিগতভাবে কর রেয়াত পাওয়ার জন্য বিনিয়োগ করার মতো সঞ্চয় করাও কঠিন। এ কারণে এ ধরনের চাকরিজীবী মধ্যবিত্তের ওপর করের চাপ কমে, এমন কোনও পদক্ষেপ দেখতে পেলে স্বস্তি পেতাম।
সকাল সন্ধ্যা: বাজেট কেমন হওয়া উচিৎ? বর্তমান প্রক্রিয়ায় কি কোনও পরিবর্তন আনা দরকার আছে বলে আপনি মনে করেন?
আলাল আহমেদ: বৃহৎ ব্যবসায়ী আর স্বার্থান্বেষী মহলকে তুষ্ট রাখার চেষ্টা কম করলে ভালো হবে।
সকাল সন্ধ্যা: বাজেট নিয়ে আপনি যখন থেকে জানতে শুরু করেছেন, তার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাজেটের যে তথ্য আপনি পেয়েছেন, তার মধ্যে এমন কোনও কিছু কি পেয়েছেন, যা আপনার পছন্দ হয়েছিল বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল?
আলাল আহমেদ: কখনও কখনও বিশেষ কিছু প্রযুক্তিপণ্যে শুল্ক কমবে জেনে আনন্দিত হয়েছিলাম। তবে পরবর্তীকালে দেখা গেছে সেগুলো বিশেষ সুবিধার ছিল না। সাধারণ মানুষ নয়, সুবিধা পেয়েছে বড় বড় ব্যবসায়ী মহল।
সকাল সন্ধ্যা: আপনার সংসারের বাজেট করার সময় আপনি কোন কোন দিকে গুরুত্ব দেন? সরকারের বাজেট আর আপনার বাজেটের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য বা মিল পান?
আলাল আহমেদ: সরকারের বাজেটে ‘বিনোদন’ খাতে বিগত বছরগুলোতে খরচ বেড়েছে। আমার যেহেতু নিউক্লিয়ার সংসার, খোরাকির খরচ কম। তাই সরকারকে খুশি রেখে বিনোদন এবং উদযাপনের বাজেট কাটছাঁট করতে হয়েছে।