ট্রাকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক ঘণ্টা বন্ধ রেখে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পথে নেমে আসেন প্রায় দেড় হাজার ব্যবসায়ী। এক ঘণ্টা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে নিজেদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তারা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম বন্দর, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক চাক্তাই এলাকায় প্রবেশের সময় একদল লোক গাড়ি আটকে ট্রাকপ্রতি ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে। টাকা না দিলে গাড়ি আটকে রাখা হয়, নানাভাবে হয়রানি করা হয়।
এই চাঁদাবাজি বন্ধ এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার স্থানীয়রা ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, সেনাবাহিনী ও থানায় আলাদা অভিযোগ করেন। তবে এতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এর আগে ২০২২ সালের মে মাসেও একই গ্রুপের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে দুই ঘণ্টা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এই ব্যবসায়ীরা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। এর পাশেই চাক্তাইয়ের অবস্থান। এখানে রয়েছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পাইকারি চালের আড়ত। এর পাশাপাশি চাক্তাই এলাকায় পাইকারি শুটকিসহ বেশ কিছু ভোগ্যপণ্যের আড়তও রয়েছে।
কয়েকজন ব্যবসায়ী সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আবারও শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি। এর নেতৃত্বে তিন ভাইয়ের নাম বলেছেন তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন ভাই তিন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ফলে দেশের রাজনীতিতে বদল এলেও চাঁদাবাজদের চেহারায় বদল আসেনি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে এখনও চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে গ্রুপটি।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, রাজাখালি হয়ে চাক্তাই প্রবেশের সময় ট্রাকশ্রমিক নামধারী কিছু চাঁদাবাজ পথে বসে ট্রাকপ্রতি বিভিন্নহারে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা না দিলে পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে হয়রানি করা হয়।
বাধ্য হয়েই দেড় হাজার ব্যবসায়ীকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পথে নামতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বিএনপি নেতা এনামুল হক বলেন, “সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজরা যে রাজনৈতিক দলের পরিচয়ই থাকুক না কেন, তাদের প্রতিহত করা হবে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের জায়গা চাক্তাইয়ে হবে না। এখানে আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা ব্যবসায়ী। কেউ আমাদেরকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারবে না। চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে আমরা এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়েছি।”