Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
সরকারকে সময় দিতে চায় সম্পাদকরা

দোষ-ত্রুটি হলে ধরিয়ে দেবেন : ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ২০টি মুদ্রিত সংবাদপত্রের সম্পাদকরা মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ২০টি মুদ্রিত সংবাদপত্রের সম্পাদকরা মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন।
[publishpress_authors_box]

অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার পক্ষে সবাই। কিন্তু কত দিন? কোনও রাজনৈতিক দল বলছে, এক বছর। দুই বছরও বলছে কোনও কোনও দল। এবার সম্পাদকদের এক বৈঠক থেকে তিন বছরও বলা হলো। আর প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে বলা হলো, সরকারের কোনও দোষ থাকলে সংবাদমাধ্যম যেন সেখানে ছাড় না দেয়।

আমন্ত্রিত হয়ে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ২০টি মুদ্রিত সংবাদপত্রের সম্পাদকরা বৈঠকে বসেন।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ হানিফ, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাসস সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার যেন যৌক্তিক সময় পর্যন্ত থাকেন।

“প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকদের জিজ্ঞেস করেছেন- যৌক্তিক সময় কতটুকু? এই অন্তর্বর্তী সরকারকে কী কী কাজ করতে হবে? ন্যূনতম কতটুকু কাজ করতে হবে? আলাপে সর্বনিম্ন যে সময়টা এসেছে, সেটা হলো মিনিমাম দুই বছর বা দুই বছরের একটু কম সময়, যাতে এই সরকারের মেয়াদ হয়। আসলে তারা বলেছেন যে এজেন্ডা বা যেই কাজটা করবেন। সেই কাজটাই আসলে নির্ধারণ করবেন তারা কতদিন থাকবেন।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে ড. ইউনূস বলেছিলেন, দেশবাসী যতদিন চায়, ততদিন থাকবেন তারা।

রবিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপেও বিশেষ পরিস্থিতিতে গঠিত এই সরকারের মেয়াদ নিয়ে আলোচনা ওঠে। 

প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও তাদের মেয়াদের সময়সীমা নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন।

সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকেও তা জানতে চান জানিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল বলেন, “একজন সম্পাদক বলেছেন, ‘ইট শুড বি বিটুয়িন টু অ্যান্ড থ্রি ইয়ার্স’। আরও একজন দুই বছরের কথা বলেছেন।

“অনেকে আবার বলেছেন, যে এজেন্ডাটা, যে ধরনের রিফর্ম ক্যারি আউট করতে হবে, তার আগে টাইমটা (সরকারের মেয়াদ) ঠিক করে দেওয়া যায় না। হাতে আপনার কাজটা কী? কাজের ওপর নির্ভর করবে আপনার কাজটা করতে কতটা সময় লাগবে।”

সম্পাদকদের সঙ্গে এই বৈঠকেও সংবিধান সংশোধনের কথা এসেছে। যে কাজটি করার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে।

শফিকুল বলেন, “কেউ সংবিধান রিরাইট করার কথা বলেছেন। কেউ কেউ কমিশনের কথা বলেছেন। কেউ আইন কমিশনের কথা বলেছেন। পুলিশের জন্য কমিশনের কথা বলেছেন। পুলিশকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়।”

বৈঠকে ড. ইউনূস বলেছেন, “এটা একটা বড় মস্ত বড় সুযোগ। আমাদের সবার জন্য। বাংলাদেশকে নতুন শিখরে নেওয়ার জন্য এটা মস্ত বড় সুযোগ ছাত্র-জনতার আন্দোলন আমাদেরকে দিয়েছে।”

তিনি সম্পাদকের বলেছেন, “আপনারা লিখবেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে শুনতে চাই।”

শফিকুল বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের দোষ-ত্রুটি নিয়ে লেখার অনুরোধ জানিয়ে ড. ইউনূস সম্পাদকদের বলেছেন, ‘আপনারা লিখবেন, প্রচুর লেখেন, আপনারা জানান। আমাদের যদি দোষ-ত্রুটি থাকে এগুলো নিয়েও আপনারা বলেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে শুনতে চাই।’ ড. ইউনূস বার বার বলেছেন, তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন এবং ভাইব্রেন্ট মিডিয়া দেখতে চান।”

সম্পাদকরা গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার অন্তরায় হিসাবে যেসব আইন আছে, সেগুলো বাদ দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করার অনুরোধ করেন। এসময় মিডিয়া কমিশনের প্রসঙ্গও আসে সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনায়।

তিনি বলেন, “ইলেকশন কমিশনকে পরিবর্তনের কথা এসেছে। কেবিনেটকে আরও বেশি প্রো-অ্যাকটিভ করার কথা এসেছে। বাংলাদেশে ক্ষমতা ঢাকাকেন্দ্রিক কেন্দ্রীভূত। সেগুলো বিকেন্দ্রিকরণের কথা এসেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, “সুনির্দিষ্ট সময়ের কথা কখনোই বলেননি প্রধান উপদেষ্টা। রাজনৈতিক দলের কাছে আসলে তিনি জানতে চেয়েছিলেন- কী কাজ সংস্কার করতে হবে। তারা প্রত্যেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। আজকে যারা সম্পাদক এসেছিলেন। তারাও প্রত্যেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে।”

তিনি বলেন, “স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যাতে কোনও সাংবাদিক কোনও অসুবিধায় না পড়ে- সে বিষয়ে একটা মিডিয়া কমিশন করার প্রস্তাব এসেছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনাধীন আছে।”

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার আরেক উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীরও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত