ভুটানের সঙ্গে লজ্জার ড্রয়ের পর নেপাল কোচ রাজেন্দ্র তামাংয়ের চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। ১৮ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় দিয়ে যখন বের হচ্ছিলেন রাজেন্দ্র, চেহারায় রাজ্যের দুশ্চিন্তার ছাপ। নারী সাফে নেপালের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার ভুটানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ছিল এই কোচের।
কিন্তু সেই নেপালই সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে ১১-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে। রেখা পাউডেল করেন ৫ গোল। হ্যাটট্রিক করেন প্রীতি রানী। সাবিতা রানা মাগার, অনিতা কেসি, আমিশা কারকি করেন ১টি করে গোল।
মেয়েদের সাফে নেপালের তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়ে ফাইনালে চোখ স্বাগতিকদের। অথচ বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হয়েও নিজেদের ফেবারিট বলার সাহস পাচ্ছে না। পাকিস্তানের কাছে ২০ অক্টোবর কোনও রকমে হার এড়িয়েছে শেষ সময়ে শামসুন্নাহার জুনিয়রের দেওয়া গোলে। এরপর ভারতের বিপক্ষে বুধবার বাংলাদেশকে খেলতে হবে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ। ওই ম্যাচে অন্তত ড্র করলেও সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ।
এর পরই হয়তো সেমিফাইনালে দেখা হয়ে যাবে নেপালের সঙ্গে। ‘বি’ গ্রুপ থেকে নেপাল ২ ম্যাচে ১ জয় ও ১ ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে খেলবে সেমিফাইনালে। সমান ২ ম্যাচে ১ জয় ও ১ ড্রয়ে ভুটানেরও ৪ পয়েন্ট। কিন্তু মালদ্বীপের সঙ্গে ম্যাচে গোল ব্যবধান দারুণভাবে বাড়িয়ে নিয়েছে নেপাল। যে কারণে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নেপালের সঙ্গেই হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের।
নেপাল মূলত গোল পেতে মুখিয়ে ছিল মালদ্বীপের বিপক্ষে। যে কারণে তাদের কোচ ভুটানের বিপক্ষে একাদশের ৫ ফুটবলারকে এ দিন বেঞ্চে রেখেই দল সাজান। যেখানে অধিনায়ক ও প্রধান গোলরক্ষক আনজিলা তুমবাপোকে বাইরে রেখেই দল গড়েন। এমনকি নেপালের নারী ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা সাবিত্রা ভান্ডারিকেও রাখেননি একাদশে। অথচ জাতীয় দলের হয়ে ৪৬ ম্যাচে ৫৩ গোল করেছেন তিনি। বর্তমানে সাবিত্রা খেলছেন ফ্রান্সের শীর্ষ নারী লিগের ক্লাব এন এভান্ত গুইনজাম্পে।
ফ্রান্স থেকে সোমবার কাঠমান্ডু এসে পৌঁছেছেন সাবিত্রা। দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তিতে তাকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে চাননি কোচ।
নেপাল এ পর্যন্ত সাফের সবচেয়ে বেশি ফাইনালে খেলেছে। গত ৬ আসরের মধ্যে ৫ বারই হয়েছে রানার্স আপ। সাফের ট্রফিটা তাইতো দীর্ঘ আক্ষেপের নাম হয়ে আছে হিমালয় দুহিতাদের জন্য।
এবার নিশ্চয় নেপাল আটঘাট বেঁধেই নেমেছে অধরা ট্রফিটা নিজেদের দেশে রেখে দেওয়ার জন্য।
সেই নেপালের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার আগে অবশ্যই বাংলাদেশকে ড্র করতে হবে ভারতের সঙ্গে। আর ভারতের কাছে কমপক্ষে ২ গোলের ব্যবধানেও হারে তাহলেও সেমিফাইনাল নিশ্চিত বাংলাদেশের। কিন্তু আপাতত নেপালকে বাদ দিয়ে সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমাদের সব নজর ভারতের ম্যাচে।