Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

কানাডায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বে নারী জেনারেল

১৮ জুলাই কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব বুঝে পাবেন জেনি কারিনিও।
১৮ জুলাই কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব বুঝে পাবেন জেনি কারিনিও।
[publishpress_authors_box]

বাধা ডিঙিয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন লেফটেন্যান্ট-জেনারেল জেনি কারিনিও। প্রথম নারী হিসেবে কানাডার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হতে যাচ্ছেন তিনি। 

তিন তারকা জেনারেল কারিনিওকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা বুধবার দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

পরে মন্ট্রিয়েল শহরে সাংবাদিকদের সামনে ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশেষত আর্কটিক অঞ্চলে জটিল ভূরাজনৈতিক ও ক্রমবর্ধমান হুমকির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কানাডার সশস্ত্র বাহিনীকে নেতৃত্ব দিতে উপযুক্ত ব্যক্তি কারিনিও।”

প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো তার সরকারের জ্যেষ্ঠ পদগুলোতে নারী নিয়োগের পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ পেলেন কারিনিও।                             

কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন জেনারেল ওয়েন এয়ার। ১৮ জুলাই অবসরে যাচ্ছেন তিনি। যাওয়ার আগে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে কারিনিওকে দায়িত্ব বুঝিয়ে যাবেন তিনি।      

কারিনিও এ মুহূর্তে কানাডার চিফ প্রফেশনাল কনডাক্ট অ্যান্ড কালচারের দায়িত্ব পালন করছেন।

কারিনিওর আগে বিশ্বে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের পদে নারী নিয়োগের ঘটনা ঘটেছিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ জ্যামাইকাতে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রিয়ার অ্যাডমিরাল অ্যান্টোনেট ওয়েমিস-গরম্যানকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় জ্যামাইকা সরকার।  

এছাড়া ২০১৮ সালে মেজর জেনারেল আলেঙ্কা আরমেঙ্ককে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়া। ন্যাটোভুক্ত কোনও দেশে নারী সেনাপ্রধানের পদে তিনিই প্রথম।

১৯৮৬ সালে কানাডার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন জেনি কারিনিও।

লেফটেন্যান্ট-জেনারেল কারিনিওকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, “আসন্ন নিয়োগের জন্যে লেফটেন্যান্ট-জেনারেল কারিনিওকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

“ক্যারিয়ারের পুরো সময়জুড়ে তার ব্যতিক্রমী নেতৃত্বের গুণাবলী, উৎকর্ষের প্রতি অঙ্গীকার ও সেবার প্রতি নিষ্ঠা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত, লেফটেন্যান্ট-জেনারেল কারিনিও কানাডাকে আরও শক্তিশালী, আরও নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি বৈশ্বিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবেন।”

সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে কারিনিওর নিয়োগের কয়েক মাস আগে প্রতিরক্ষা নীতি হালনাগাদ করে কানাডা সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী পাঁচ বছর দেশটিতে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় প্রায় ৮০০ কোটি ডলার বাড়ানো হয়।

কে এই কারিনিও

কানাডার কুইবেক প্রদেশের ভেল-দে-সুস শহরে জন্ম কারিনিওর। তার বাবা ছিলেন পুলিশ সদস্য, মা শিক্ষক।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ১৯৮৬ সালে কানাডার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন কারিনিও। এর ঠিক তিন বছর আগে নারীদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেয় দেশটি।

কমবেট ইঞ্জিনিয়ার (বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও যুদ্ধক্ষেত্রে স্থাপনা নির্মাণ ও ধ্বংসের কাজে নিয়োজিত সেনা) হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারিনিওর পদোন্নতি হতে বেশি সময় লাগেনি।

ইরাকে মোতায়েন করা ন্যাটোর সেনা।

২০০৮ সালে একটি বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কমবেট ইঞ্জিনিয়ার কারিনিও। ওই প্রথম কানাডার কোনও নারী এই দায়িত্ব পালন করেন। 

কানাডার সশস্ত্র বাহিনীতে জেঁকে বসা সেক্সিজম ও অসদাচারণ নির্মূলের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কারিনিও। ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নারীবিদ্বেষী। তাদের হাতে নারীরা যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হন।               

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীতে দীর্ঘ ৩৮ বছরের ক্যারিয়ারে ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর হয়ে সেনাদের নেতৃত্ব দেন কারিনিও।  

আফগানিস্তানে দুবার হামলার হাত থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।

২০১৯ থেকে ২০২০ সাল এই দুই বছর ইরাকে ন্যাটোর ট্রেনিং মিশন নেতৃত্ব দেন কারিনিও। সেখানে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় রেজিমেন্ট (সেনাসংখ্যা ১০ হাজারের বেশি) ‘সেকেন্ড কানাডিয়ান ডিভিশন’-এরও নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।

নেতৃত্ব ও বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে মেরিটোরিয়াস সার্ভিস মেডেল পুরস্কারে ভূষিত হন কারিনিও।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত