জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডা। সেই প্রস্তাবের ওপর বুধবার ভোট হলে তাতে হাউজ অব কমন্সের আইনপ্রণেতাদের বড় অংশ ট্রুডোর পক্ষেই ভোট দেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টি অব কানাডার নয় বছরের শাসন অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে হাউজ অব কমন্সে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে তেমন একটা সমর্থন কুড়াতে পারেনি তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডা।
হাউজ অব কমন্সের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ২১১ জন ট্রুডো সরকারের প্রতি আস্থা রেখে ভোট দেয়। আর ১২০ জন অনাস্থা জানায়। অনাস্থা ভোটে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করায় ক্ষমতায় থাকছেন ট্রুডো। নির্ধারিত সময়ের আগে দেশটিতে নির্বাচন হচ্ছে না।
অনাস্থা ভোটে সহজ জয় পাওয়ায় ট্রুডোর দলের জ্যেষ্ঠ নেতা কারিনা গুল্ড সাংবাদিকদের বলেন, “আজ কানাডার জন্য শুভদিন, কারণ আমি মনে করি না, দেশের জনগণ এখনই নির্বাচন চায়।”
তবে অনাস্থা ভোটে জয় পেলেও দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না কানাডার প্রধানমন্ত্রী। একদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে আবাসন সংকট শিগগিরই দূর হবে- এমন কোনও আশার বাণী জনগণকে শোনাতে পারছে না ট্রুডো সরকার।
ফলে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারছেন না ট্রুডো। তার ওপর এ মাসে নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা তার সঙ্গে করা চুক্তি থেকে সরে এলে তার রাজনৈতিক অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে পড়ে।
২০২২ সালে করা সেই চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের অক্টোবরের শেষে নির্ধারিত নির্বাচন পর্যন্ত ট্রুডোকে সমর্থন দিয়ে যাবে নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি।
অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ট্রুডোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবির পেছনে কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডার যুক্তি, ট্রুডো সরকার কেন্দ্রীয় কার্বন কর বাড়িয়েছে। এটা দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই কানাডার জনগণ। তাছাড়া লিবারেলদের শাসনামলে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় অনেক বেড়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডা বলেছে, “অনেক হয়েছে। খরচ বেড়েছে, কর বেড়েছে, অপরাধ বেড়েছে। সময় শেষ।”
কানাডার জনগণ সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ভালো নেই, তা অকপটে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। তবে তিনি বলেছেন, মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা ও তাদের চাওয়ার ওপর জোর না দিয়ে কনজারভেটিভরা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে বেশি।