Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

‘কান উৎসব মানে শুধু রেড কার্পেট নয়’

ছবি: সাদিয়া খালিদ ঋতির ফেইসবুক পেইজ থেকে নেয়া
ছবি: সাদিয়া খালিদ ঋতির ফেইসবুক পেইজ থেকে নেয়া
Picture of পার্থ সনজয়, কান থেকে

পার্থ সনজয়, কান থেকে

দ্বিতীয়বারের মতো কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ফিপ্রেসি’ (ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্য লা প্রেস সিনেমাটোগ্রাফিক) বিচারক হিসেবে এসেছেন বাংলাদেশের ফিল্ম ক্রিটিক সাদিয়া খালিদ ঋতি। পেশাদার চলচ্চিত্র সমালোচক এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের জাতীয় সংগঠনগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন হচ্ছে ‘ফিপ্রেসি’। যার লক্ষ্য- ‘চলচ্চিত্র সংস্কৃতির উন্নয়ন ও প্রসার এবং এই পেশায় জড়িতদের স্বার্থ রক্ষা করা।

কান উৎসবের নবম দিন বুধবার কানের রেড কার্পেটে হাঁটবেন ঋতি। তার আগে ‘পালে দ্য ফেস্টিভাল’ ভবনে তার সঙ্গে কথা হলো।

প্রশ্ন: ঋতি, কেমন কাটছে এবারের উৎসব?

ঋতি: এবারের অভিজ্ঞতা ভালো। আগে একবার ( ৭২-তম আসর, ২০১৯) আসাতে একটা চেনা-জানার বিষয় ছিল। এবার আমার সেকশনটা ভিন্ন। আঁ সার্তে রিগা। স্ক্রিনিংগুলো মোটামুটি একই লোকেশনে হচ্ছে। খুব বেশি ছোটাছুটি করতে হচ্ছে না। খুবই গর্ব হচ্ছে। বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছি। রেড কার্পেট নিয়ে খুবই এক্সাইটেড। এছাড়া মূল কাজ এ বিভাগের ১৮ টি ছবি দেখা। তার মাঝে কিছু ইভেন্ট পরে গিয়েছে। কোন কোন দিন পাঁচটিও স্ক্রিনিং দেখতে হচ্ছে। বলা যায়, একটা হেকটিক সিচুয়েশন যাচ্ছে। তবে অর্ধেকেরও বেশি সিনেমা দেখা হয়ে গেছে।

প্রশ্ন: গেল বছর বাংলাদেশ কানে স্টল নিয়েছিল। যদিও ফেস্টিভালের পুরো সময়টাতা ফাঁকা ছিল। এবছর স্টলই নেয়া হয়নি। কানে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ কি শঙ্কার মধ্যে পরলো?

ঋতি: প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ প্রাতিষ্ঠানিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে হতে হবে। এটার একটা বড় প্রস্তুতির দরকার আছে। বছরব্যাপী তা হতে হবে। স্টলটা না হয় আমরা নিলাম, কিন্তু তাতে আমরা করবোটা কি? আমাদের তো ফিল্ম বিক্রির একটা ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঐ রকম প্রেজেন্টেবল সিনেমা থাকতে হবে। সম্ভাবনাময় চলচ্চিত্র থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে যারা ফেস্টিভাল সার্কিটে অনেকদিন ধরে অ্যাকটিভ আছি, তাদের সঙ্গে কনসাল্ট করেও এই পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। গেল বছর একটা ফাঁকা স্টল গিয়েছে আমাদের। আমি ঐ বছর আসিনি। কিন্তু আপনাদের রিপোর্ট থেকে জেনেছি। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন: ২০২১ এ রেহানা মরিয়ম নূরের অফিসিয়াল সিলেকশন কানে বাংলাদেশকে গর্বিত করেছে। কেমন করে চলচ্চিত্রের বড় আসরগুলোতে বাংলাদেশ নিয়মিত হতে পারে?

ঋতি: আমাদের ইন্ডাস্ট্রি-র পরিধিটা খুব ছোট। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম মেকিং পরিধিটাও বড় নয়। আমাদের দেশটাও ছোট। সবমিলিয়ে আমাদের হয়তো আরো সময় লাগবে নিয়মিত হতে। ভারতও তো প্রতিযোগিতা বিভাগে ২৯ বছর পর জায়গা পেল। খুব যে নিয়মিত সাউথ এশিয়ান ছবি আসছে তাও নয়। ভারতের সিনেমা হরহামেশাই আসছে। হয়তো প্রতিযোগিতা বিভাগে নয়। আমাদের মূল প্রতিযোগিতায় না হলেও অন্য বিভাগগুলোতে আসতে পারা উচিত। এটাকে আমি ঘাটতে মনে করি।

কান উৎসবে সাদিয়া খালিদ ঋতির সাথে লেখক

সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। ভারতে প্রতিটা রাজ্যে যে চলচ্চিত্র উৎসব হয়, তার পুরো খরচটা সরকার দেয়। বড় বাজেটের ফেস্টিভাল হচ্ছে। প্রাইজমানিও বেশ। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের কথাই ধরুন, সেখানে ৫০ লাখ রুপি দেয়া হয় প্রথম পুরস্কারে। আমাদেরও এই রকম পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।

প্রশ্ন: কান চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের দারুণ আগ্রহ। তবে তাতে সিনেমা ছাপিয়ে উৎসবের জৌলুস বেশি ধরা দেয়। এই আগ্রহটাকে কোন চোখে দেখেন?

ঋতি: দেখুন, কান চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে আমাদের আগ্রহটা তারেক মাসুদের মাটির ময়না থেকে। এরপর একটা লম্বা বিরতি। দীর্ঘদিন কোন সিনেমা আসেনি। দেখা যাচ্ছে, উৎসাহটা রেড কার্পেটকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আমরা ঐশ্বরিয়া কোন পোশাকে রেড কার্পেটে হেঁটেছে, দিপীকার পোশাকের রঙ কেমন- এমন সব বিষয়ে আগ্রহী। আমাদের কাছে মনে হয়, কান মানে রেড কার্পেট। আমার আক্ষেপ হচ্ছে, জৌলুসটা সরিয়ে যদি কাজগুলো ভালোভাবে প্রচারের আলোয় আসতো। আমি মনে করি না, কান মানে রেড কার্পেট। কানের প্রোগ্রামে আর্ট হাউজের পাশাপাশি মেইন স্ট্রিমিং এর কাছাকাছি ফিল্ম থাকে। দর্শক ধরে রাখতে একটা ফেস্টিভাল কিন্তু ব্যালেন্স করবেই। তবে আমাদের গ্ল্যামারের দিকেই যেন মনোযোগ বেশি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত