জাহাজ নির্মাণব্যয় পরিশোধ না করে চট্টগ্রামের একটি ডকইয়ার্ড থেকে ৭৪ কোটি টাকা মূল্যের দুটি জাহাজ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরেন ফাতিমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান এফএমসি গ্রুপের হেড ক্লার্ক ফিরোজ আহমদ মঙ্গলবার মামলাটি করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, মঙ্গলবার রাতে মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়। মামলার তদন্ত কাজ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ৭ মার্চ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরেন ফাতিমার নির্দেশে অন্য আসামিরা অস্ত্রসহ নগরীর নাসিরাবাদ এলাকার এফএমসি গ্রুপের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন।
এসময় তাদের একজন দারোয়ান বাধা দিলে তাকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে তারা কার্যালয়ে ঢুকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আঘাত ও ভাঙচুর করে দুই লাখ টাকার ক্ষতি করেন।
এরপর এফএমসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ইয়াছিন চৌধুরীর কার্যালয়ে ঢুকে অবৈধ অস্ত্র ঠেকিয়ে ১৫-২০টি স্ট্যাম্প ও ডকইয়ার্ডের প্যাডে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেন আসামিরা।
পরে তারা মামলা করার প্রস্তুতির খবর পেয়ে এফএমসি গ্রুপের কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানকে অপহরণ, গুম, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো ও হত্যার হুমকি দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারে সাবেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রী ছাড়া আরও পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তারা হলেন- হাছান মাহমুদের ছোট ভাই খালেদ মাহমুদ ও এরশাদ মাহমুদ, তার ব্যক্তিগত সহকারী এমরুল করিম রাশেদ, তার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান দ্য বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সৈয়দ নুর উদ্দীন ও প্রতিষ্ঠানটির হিসাব বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ এরাদুল হক।
এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়।
বাদীর অভিযোগ, একটি কনটেইনার ও একটি ফিশিং জাহাজ নির্মাণের জন্য হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেডের সঙ্গে এফএমসি গ্রুপের চুক্তি হয়। পরে হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী কোনও টাকা না দিয়েই ২৪ কোটি টাকা দামের ফিশিং জাহাজ ডেলিভারি নিয়ে যান।
এক পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা দামের কনটেইনার জাহাজটিও কোনও টাকা না দিয়ে ডেলিভারি দিতে চাপ দিতে থাকেন দাবি করে বাদী আরও অভিযোগ করেন, এ নিয়ে এফএমসি গ্রুপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের মতবিরোধ হয়। পরে টাকা পরিশোধ না করেই ডকইয়ার্ডে জোর করে ঢুকে কনটেইনার জাহাজটি নিয়ে যান আসামিরা।