Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

বিরোধিতার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন ইসরায়েল সরকারের

ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি উত্থাপন করা হয়।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি উত্থাপন করা হয়।
[publishpress_authors_box]

কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মন্ত্রিসভা, যা রবিবার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার এক সদস্যের বরাতে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, শুক্রবার চুক্তির পক্ষে দেশটির ২৪ জন মন্ত্রী ভোট দেন। বিপক্ষে ভোট দেন আটজন।

এর মধ্য দিয়ে গাজায় টানা ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলার অবসান ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলা এবং একই দিন ইসরায়েলের পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ।

এই যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ। অনাহারে মারা গেছে আরও অনেকে। বাড়িঘর হারিয়েছে ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি।

অন্যদিকে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের ৯৮২ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৯৮৭ জন সেনা নিহত হয়।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর গত বুধবার জানিয়েছিল, যুদ্ধে বিরতি দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস।

এর দুদিন পর ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় চুক্তিটি তোলা হলে বেশির ভাগ মন্ত্রী এর পক্ষে ভোট দেওয়ায় তা পাস হয়।

যুদ্ধে প্রাণ হারায় বহু ফিলিস্তিনি শিশু।

চুক্তির প্রথম পর্যায় সম্পর্কে বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে হামাস যে আড়াইশর মতো ইসরায়েলিকে গাজায় এনে বন্দি করে রেখেছিল, তাদের মধ্যে ৩৩ জনকে এই পর্যায়ে মুক্তি দেওয়া হবে। এসব বন্দিদের মধ্যে নারী, শিশু, অসুস্থ ও আহত বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।

বিনিময়ে যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের হাতে বন্দি হওয়া প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনি এই পর্যায়ে ছাড়া পাবে। এদের মধ্যে ইসরায়েলের আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বন্দিও রয়েছে।

বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি গাজার জনবহুল এলাকা (যেখানে কমপক্ষে এক হাজার মানুষের বাস) থেকে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের ভেতরকার ৭০০ মিটার এলাকায় থাকা নিজেদের সেনা সরিয়ে নেবে জায়নবাদী রাষ্ট্রটি।

এছাড়া চুক্তির প্রথম পর্যায় মেনে গাজার দক্ষিণে অবস্থান করা বাস্তুচ্যুত বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের উপত্যকার অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলে ফিরতে দেবে ইসরায়েল। দুর্ভিক্ষপীড়িত ওই অঞ্চলে দিনে সর্বোচ্চ ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক এসময় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।

ইসরায়েল ও হামাস ছয় সপ্তাহ ধরে প্রথম পর্যায়ের এসব শর্ত বাস্তবায়ন করবে।

ইসরায়েলের হামলায় বাস্তুচ্যুত হয় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি।

চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি সব ইসরায়েলি বন্দিকে ছেড়ে দেবে হামাস, বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে আরও ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করবে দেশটি।

এ পর্যায়ে গাজা থেকে সব সেনা সরিয়ে নেওয়ার কাজও শুরু করবে ইসরায়েল। এই শর্ত মানতে রাজি ছিলেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থি সদস্যরা। একারণেই তারা চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন।

যুদ্ধবিরতির চুক্তির তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে, যা শেষ হতে কয়েক বছর লেগে যাবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত