বদলে গেছে বাংলাদেশ। বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও। বিসিবির বর্তমান সভাপতি এখন ফারুক আহমেদ। তিনি যোগ দেওয়ার পরই গুঞ্জন উঠেছে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভবিষ্যৎ নিয়ে। বিকল্প কাউকে খোঁজার কথাও বলেছেন ফারুক আহমেদ।
রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই প্রশ্ন করা হয়েছিল হাথুরুসিংহেকে। পাকিস্তান সিরিজই তার শেষ কিনা, এমন প্রশ্নে হাথুরুসিংহে বললেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি যে, যখন নতুন কোনও নেতৃত্ব দায়িত্বে আসে তখন তাদের চিন্তাধারা ভিন্ন হয়। তবে আমি মুখিয়ে আছি তাদের সাথে কথা বলার সুযোগ পাওয়ার জন্য। আমার কাজ হচ্ছে দলকে সেরা উপায়ে তৈরি করা। যে পরিশ্রম আমরা গত কয়েক মাসে করেছি, সেসব নিয়েই আমরা পরের ম্যাচে মনোযোগী আছি।’’
প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জয়ের পেছনে অন্যতম অবদান প্রথম ইনিংসে ৫০০’র বেশি রান করা। এ নিয়ে হাথুরুসিংহে বললেন,‘‘ আমরা এর আগে ফলনির্ভর উইকেটে ম্যাচ খেলেছি। সেসব জায়গায় যদি আপনি ২৫০-২৬০ রানও করেন সেটা জেতার মত রান হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড সিরিজে এমনকি শ্রীলঙ্কা সিরিজেও কিছু ক্ষেত্রে এরকমটা হয়েছে। তবে এই সিরিজে পিচ অনেক ভালো ছিল। উইকেটে সময় কাটানোতে জোর দিয়েছি আমরা। তাদের পেসারদের বেশি বল করাতে চেয়েছি আমরা। মাইন্ডসেট, খেলার অ্যাপ্রোচ, গেমপ্ল্যান সবকিছুই ভিন্ন ছিল কন্ডিশনের কারণে। উইকেটের কারণে এসব ব্যাপারে পরিবর্তন এনেছি আমরা যার ফলে ভালো করতে পেরেছি।’’
শুক্রবার দ্বিতীয় টেস্টে ড্র করলে সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। তাই দল কী আক্রমণাত্মক খেলবে নাকি রক্ষণাত্মক? হাথুরুসিংহে হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আসলে আমরা সবসময় অফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজিতেই যাব। কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে অনেক সময় স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আসে। প্রথম ম্যাচ থেকে আমাদের প্রস্তুতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। আমরা নিজেদের শক্তির জায়গাগুলো জানি, সীমাবদ্ধতাগুলোও জানি। প্রতিপক্ষের শক্তি এবং সীমাবদ্ধতার জায়গাগুলোও জানা আছে আমাদের। পিচ, কন্ডিশন সবকিছু বিবেচনা নিয়েই আমরা আমাদের স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে থাকি।’’
প্রথম টেস্ট জয়ের পর দলের আত্মবিশ্বাস যে তুঙ্গে সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন হাথুরুসিংহে, ‘‘আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে আছে। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেওয়া সহজ কোনো কাজ নয়। তারা অনেক অনেক ভালো দল। এখনও আমরা দ্বিতীয় ম্যাচে অনেক ফাইট আশা করছি তাদের থেকে। কাল কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে পিচ দেখে আমরা দলে পরিবর্তন আনতেও পারি। কারণ আমরা এখনও পিচ দেখতে পারিনি। কন্ডিশনে কিছুটা ব্যবধান আছে আগের ম্যাচের চেয়ে।’’
মুশতাক আহমেদ যোগ দেয়ার পর উন্নতি করেছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। এজন্য খুশি হাথুরুসিংহে, ‘‘আমি বলেছিলাম মুশতাকের বেশ ভালো রকমের অভিজ্ঞতা আছে। এখানের স্থানীয় অনেক ব্যাপারে তার বেশ জ্ঞান রয়েছে। এসব ব্যাপারে সে ভালো সাহায্য করছে আমাদের।’’
দলের দুই তরুণ নাহিদ রানা ও সাদমানকে নিয়েও খুশি বাংলাদেশের এই প্রধান কোচ, ‘‘আসলে এই দুজন (নাহিদ ও সাদমান) বেশ তরুণ ক্রিকেটার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিবেচনায় নিলে। নাহিদ রানা দারুণ এক্সাইটিং একজন প্লেয়ার। কেবল বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিবেচনা করেই বলছি। সে টানা ১৪০, ১৫০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে বল করে যেতে পারে। সে তরুণ, তার সেরাটা আসতে এখনও বাকি। আশা করি তার কাছ থেকে আরও অনেক কিছু দেখতে পারব আমরা।
সাদমান বাংলাদেশের হয়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছে। এখানে সুযোগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে। দলের বাইরে ছিল ২ বছরের মত। মানসিকভাবে দারুণ শক্ত ছিল সে, দলে ফিরে এভাবে দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে। বেশ চাপেও ছিল সে।’’