অভিনেত্রী হোমায়রা নুসরাত হিমুর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় আসামি মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ।
বুধবার আদালত সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাব্বির হোসেন সোমবার এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১১ সালে মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হোমায়রা হিমুর।
গত বছরের ২ নভেম্বর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সেদিন রাতেই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তার মামা নাহিদ আক্তার উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।
মামলায় রুফিকে আসামি করা হলে পরদিন তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। কয়েক দফা রিমান্ড শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, উত্তরায় একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন হোমায়রা হিমু। সেই ফ্ল্যাটে থাকতেন মেকআপ আর্টিস্ট কবির আহম্মেদ মিহির। ২০১৪ সালে হোমায়রা হিমুর খালাত বোনের সঙ্গে রুফির বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিচ্ছেদ হয়।
হিমুর খালাত বোনের সঙ্গে রুফির বিচ্ছেদ হলেও অভিনেত্রীর সঙ্গে আসামির নিয়মিত যোগাযোগ ছিল উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, আত্মহত্যার আগের দিন অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর রুফির সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তার মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেন হিমু।
এতে আরও বলা হয়, পরদিন হিমুর বাসায় যান রুফি। মেকআপ আর্টিস্ট কবির আহম্মেদ মিহির বাসার দরজা খুলে দেন। মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেওয়া নিয়ে হিমুর সঙ্গে রুফির ঝগড়া হয়।
“একপর্যায়ে মিহিরের রুমে গিয়ে রুফি বলেন, ‘হিমু আত্মহত্যা করেছে’। হিমুকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেন জিয়াউদ্দিন। এরপর রাগে-অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অভিনেত্রী।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, সেদিন মিহিরের রুমে এসে রুফি আত্মহত্যার কথা জানানোর পর মিহিরের জিজ্ঞাসায় রুফি জানান, তিনি বাথরুমে ছিলেন এবং তখনই হিমু আত্মহত্যা করেন। এরপর মিহির হিমুর রুমে গিয়ে তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান।
সেসময় রুমে থাকা কাচের দুটি গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান মিহির। পরে মিহির আর রুফি হিমুকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। সেসময় মরদেহ হাসপাতালে রেখে হিমুর দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান রুফি।