Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারজট কাটেনি

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

চট্টগ্রাম সমু্দ্রবন্দরের জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া ও জেটিতে পণ্য ওঠানামা এবং পরিচালন কার্যক্রম সচল থাকলেও কন্টেইনারজট এখনও কাটেনি।

পোশাক কারখানাগুলো সচল না হওয়ায় এবং সড়কপথে আতঙ্ক থাকায় বন্দর থেকে কন্টেইনারবাহী গাড়ি বের হয়েছে খুব কম। বিশেষ করে চট্টগ্রাম শহর এলাকার আশপাশের কারখানায় পণ্য পরিবহন হয়েছে মঙ্গলবার। সেদিন সকাল পর্যন্ত কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে মাত্র ৩২৯ একক। বুধবার সকাল পর্যন্ত সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৩৮ এককে।

অথচ স্বাভাবিক সময়ে বন্দরে কন্টেইনার ছাড় হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার একক। এই অবস্থায় মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্দরে পণ্যভর্তি কন্টেইনার জমেছিল ৪৪ হাজার একক। আর বুধবার সকাল পর্যন্ত সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ এককে।

কন্টেইনার ডেলিভারি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সোমবার তো কারফিউ ছিল। আর মঙ্গলবার বিকাল থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। শুল্কায়ন-অ্যাসেসমেন্ট না হওয়ায় বন্দর থেকে ডেলিভারি নেওয়া যায়নি। আশা করছি বুধবার থেকে কাস্টমসে কাজ শুরু হলে ডেলিভারি বাড়বে। পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

তিনি বলেন, “দুদিন শিল্প কারখানা খোলা না থাকাও ডেলিভারি না হওয়ার অন্যতম। কারণ কন্টেইনারভর্তি কাঁচামাল ডেলিভারি নিয়ে সেগুলো কারখানায় রাখার সুযোগ ছিল না। এখন বুধবার থেকে কারখানা চালু হওয়ায় ডেলিভারি বাড়বে।”

বুধবার সারাদিনে কন্টেইনার ডেলিভারি বাড়বে বলে আশা করছে বন্দর পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু যে পরিমাণ কন্টেইনার বন্দরে জমেছে সেটি স্বাভাবিক হতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা।

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার রাখা যায় ৫৩ হাজার ৫১৩ একক। বিপরীতে বুধবার সকাল পর্যন্ত ছিল ৪২ হাজার ৬৩৮ একক। এত পরিমাণ কন্টেইনার জমে যাওয়ায় বন্দরের ভেতরে পরিচালন কার্যক্রমে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ যে পরিমাণ কন্টেইনার জাহাজ থেকে নামে, একই পরিমাণ কন্টেইনার বন্দর থেকে ছাড় না নিলে কন্টেইনার জট তৈরি হয়।

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামার হিসাবে, জাহাজ থেকে আমদানি কন্টেইনার নেমেছে ৪ হাজার ৯৭১ একক, বিপরীতে ছাড় হয়েছে ২ হাজার ২৩৮ একক। ফলে অর্ধেক কন্টেইনারই ডেলিভারি হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় বুধবার থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি বাড়বে। এর তথ্য জানা যাবে বৃহস্পতিবার সকালে। আশা করছি, ধীর ধীরে আমরা বন্দরে জমে থাকা কন্টেইনার ডেলিভারি দিয়ে স্বাভাবিক করতে পারবে।”

তিনি বলেন, “এই ক’দিনে বন্দরের ভেতরে কিন্তু কন্টেইনার ওঠানামা, জাহাজ আসা যাওয়া, পরিচালন কার্যক্রম সচল ছিল। কিন্তু ডেলিভারিতে সমস্যা ছিল। এখন সেটি কেটেছে। পণ্য পরিবহন মালিকরা গাড়ি চালানো শুরু করায় বন্দর থেকে ডেলিভারি নিচ্ছেন।”

এর আগে জুলাইয়ের শেষে কারফিউ জারি, দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে বন্দরে কন্টেইনার জমে সাড়ে ৪৩ হাজারে উন্নীত হয়েছিল। জমে থাকা কন্টেইনারের ভাড়া মাফ করতে এফবিসিসিআইয়ের দাবির প্রেক্ষিতে ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যাদের কন্টেইনার এসেছে, তাদের সর্বোচ্চ সাতদিনের বন্দর স্টোররেন্ট মাফ করে দেয় মন্ত্রণালয়। সেই সুবাদে ২ আগস্ট পর্যন্ত দ্রুত কন্টেইনার ছাড় হয়। এরপর থেকে এতে আবার ধীরগতি দেখা দেয়।

দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ৯২ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই জাহাজে আসা-যাওয়া করে। ফলে অর্থনীতির প্রাণ এই বন্দর কতটা সচল আছে তার পর দেশের গতিশীলতা নির্ভর করে। মোট রাজস্ব আয়ে এর বড় প্রভাব পড়ে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত