চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন ২০২১ সালে ই কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় একটি মোটরসাইকেল কিনেছিলেন। এপ্রিল মাসে টাকা জমা দেন। টাকা জমা দেওয়ার পর মোটরসাইকেল না দিয়ে গড়িমসি করে ইভ্যালি। ছয় মাস পর মোটরসাইকেলের বদলে একটি চেক দেওয়া হয় তাকে। সেটি প্রত্যাখ্যাত হয় ব্যাংকে । এরপর অক্টোবর মাসে চেক প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামের আদালতে মামলা করেন তিনি।
অভিযোগ নিয়ে শুনানি শেষে প্রায় ৩২ মাস পর আদালত রবিবার সেই মামলায় রায় দেন। তাতে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের এক বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
চট্টগ্রামের সপ্তম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ মো. মহিউদ্দিনের দেওয়া এই রায়ে এই দম্পতিকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে সারাদেশে চেক প্রতারণা, অনিয়মের অভিযোগে অনেক মামলা হলেও এটি প্রথম রায় বলে জানাচ্ছেন আইনজীবীরা।
শুনানির সময় আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত দুজনের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দেয় বলে জানিয়েছেন বাদীর জসিম উদ্দিনের আইনজীবী শাহরিয়ার ইয়াছির আরাফাত।
তিনি বলেন, “আদালতে আজকের শুনানিতে আসামি পক্ষ উপস্থিত ছিল না। বিজ্ঞ বিচারক যুক্তি-তর্ক শুনে রাসেল দম্পতির উভয়কে এক বছর করে কারাদণ্ড এবং চেকের সমপরিমাণ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত দুজনের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।”
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি কয়েক বছর আগে যাত্রা শুরুর পর দ্রুতই সাড়া ফেলে। তবে কিছুদিন পরই জমে ক্রেতাদের অভিযোগের পাহাড়। অর্থ দিয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগে মামলাও হতে থাকে।
২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা এক মামলায় ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও শামীমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২২ সালের এপ্রিলে জামিনে মুক্তি পান স্ত্রী শামীমা। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর রাসেলও শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি পান।
চট্টগ্রামেও একাধিক গ্রাহক টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল না পেয়ে ২০২২ সালে প্রতারণার মামলা করেন ইভ্যালির বিরুদ্ধে। সেসব মামলায় রাসেল দম্পতির বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ আছে।
মামলাকারীদের একজন চট্টগ্রামের চকবাজার থানার ডিসি রোডের ব্যবসায়ী চৌধুরী নাঈম সরোয়ার। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল অর্ডার দিয়ে তা পাননি তিনি। পরে ইভ্যালি থেকে একটি চেক দেওয়া হলে সেটি ব্যাংকে প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর ২০২২ সালের জুলাইয়ে মামলা করেন তিনি। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে চট্টগ্রামের আদালতে।



