Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ হাজার ৩৫১ একক কন্টেইনার ছাড়া হয়।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ হাজার ৩৫১ একক কন্টেইনার ছাড়া হয়।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতার প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরেও। নির্ধারিত সময়ে কন্টেইনার ছাড়তে না পারায় সঙ্কট দেখা দেয়। সেই সঙ্কট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বন্দরের পরিস্থিতি।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সহিংসতা চলাকালে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য উঠানামা, জাহাজ আসা-যাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও পণ্য ছাড় কমে যায়। ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ও কারফিউ জারির পর ১৯ জুলাই থেকে বন্দরে পণ্য সরবরাহে অচলাবস্থা দেখা দেয়।

প্রতিদিন যেখানে সাড়ে তিন হাজার একক (প্রতিটি ২০ ফুট দীর্ঘ হিসাবে) কন্টেইনার বন্দর থেকে ছাড়া হতো, সেটি এসময় নেমে আসে ২০০ একক কন্টেইনারে।

চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ৫৩ হাজার ৫১৩ একক কন্টেইনার রাখা যায়। সম্প্রতি ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউয়ের কারণে পর্যাপ্ত কন্টেইনার বন্দর থেকে ছাড় নিতে না পারায় বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার জমে ৪৩ হাজার এককে উন্নীত হয়। এতে বন্দর পরিচালন কার্যক্রমে সৃষ্টি হয় জটিলতা।

২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর সরকারি সিদ্ধান্তের পরদিন বন্দরের পরিস্থিতির উত্তরণ হতে থাকে। তবে বন্দরে আটকে থাকা কন্টেইনারের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “কারফিউ ও ইন্টারনেট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুদিন সময় নিলে আমরা বেশ জটিলতার মধ্যে পড়ে যেতাম। এই কদিন আমরা বন্দর থেকে আমদানি পণ্যছাড় এবং রপ্তানি জাহাজীকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি।

“এর ফলে সহিংসতার সময় বন্দরে জমে থাকা ৪৩ হাজার একক কন্টেইনার সোমবার কমে ৩৮ হাজার ৬০২ এককে নেমে আসে। সহিংস পরিস্থিতির আগে গত ১৮ জুলাই বন্দর ইয়ার্ডে মোট কন্টেইনার ছিল ৩৫ হাজার ৩৮২ একক।”

তিনি বলেন, “যে গতিতে এখন কন্টেইনার ছাড় হচ্ছে, তাতে বৃহস্পতিবার নাগাদ ইয়ার্ডে কন্টেইনারের পরিমাণ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”  

ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যভর্তি কন্টেইনার ছাড় কঠিন হয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানিয়েছে, দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে ম্যানুয়ালি পণ্যভর্তি আমদানি কন্টেইনার ছাড় শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টম। তবে সেটি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম ছিল।

ইন্টারনেট সংযোগ চালু হলে ২৪ জুলাই থেকে বন্দরে আটকে থাকা কন্টেইনার ছাড় শুরু হয়। ২৪ জুলাই একদিনে কন্টেইনার ছাড় হয় ২ হাজার ৮৭৬ একক। পরদিন তা আরও বেড়ে ৩ হাজার ৬০৭ একক এবং ২৬ জুলাই রেকর্ড ৫ হাজার ২০৭ একক হয়।

২৭ ও ২৮ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এই দুদিন কন্টেইনার ছাড় একটু কমে যথাক্রমে ৩ হাজার ৪৯৯ একক ও ২ হাজার ৭৪৮ একক হয়। ২৯ জুলাই তা আবার বেড়ে ৩ হাজার ৩৫১ এককে উন্নীত হয়।

জরিমানা ছাড়া পণ্যছাড়ের সুবিধা

২৪ জুলাই থেকে পণ্যছাড়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দেশের শিল্পকারখানা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে শুরু করেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করতে পেরে উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছেন মালিকরা।

১৮ জুলাই থেকে এক সপ্তাহ আটকে থাকা পণ্যছাড় করতে না পেরে বন্দরের জরিমানা মাশুল গুণতে হয় শিল্প মালিক ও বাণিজ্যিক পণ্য আমদানিকারকদের।

এই এক সপ্তাহ বিনা জরিমানায় পণ্যছাড় করতে পোশাকশিল্প মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সোমবার। তবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সেই প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। ফলে পোশাকশিল্প মালিকদের পাশাপাশি দেশের অন্য আমদানিকারকরা জরিমানা ছাড়া পণ্যছাড়ের সুযোগ পাবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অস্থিরতার সময়ে পণ্যছাড় করতে না পারার দায় কিন্তু ব্যবসায়ীদের নয়। আমরা বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি জানিয়েছি। সরকার তা উপলব্ধি করেছে।

“ফলে অস্থিরতার সময়ে জরিমানা ছাড়া পণ্যছাড়ের সুবিধা বন্দরের ভেতর যাদের পণ্য আটকে ছিল, সবাইকে পেতে হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত