Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
রেটিং টুর্নামেন্ট

গ্র্যান্ডমাস্টারদের চমকে ১২ বছরের সাকলাইনের বাজিমাত

কিশোর দাবাড়ু সাকলাইন মোস্তফা সাজিদের শ্রীলঙ্কা যাওয়া অনিশ্চিত। ছবি: সংগৃহীত
কিশোর দাবাড়ু সাকলাইন মোস্তফা সাজিদের শ্রীলঙ্কা যাওয়া অনিশ্চিত। ছবি: সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

দাবা ফেডারেশনে বছর জুড়েই চলে রেটিং টুর্নামেন্ট। কখনো সেখানে অংশ নেন গ্র্যান্ডমাস্টারদের কেউ। কখনো আন্তর্জাতিক মাস্টার, ফিদে মাস্টারসহ নন রেটেড দাবাড়ুরাই খেলে থাকেন এসব টুর্নামেন্টে। ফেডারেশনে তেমনই একটা টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে আজ।

ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রোটিং দাবায় খেলেছেন দেশের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান ও রিফাত বিন সাত্তার। স্বাভাবিকভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এই দুজন দাবাড়ুই ফেবারিট ছিলেন। কিন্তু এদেরকে টপকে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১২ বছরের এক কিশোর। যার ফিদে রেটিং ২০৮৯। বাংলাদেশ পুলিশের এই ক্যান্ডিডেট মাস্টার সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ ৯ খেলায় সাড়ে সাত পয়েন্ট পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে।

সমান পয়েন্ট পেয়ে বাংলাদেশ আনসারের গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান হয়েছেন রানার-আপ। সাকলাইন ও জিয়াউর রহমানের পয়েন্ট সমান হওয়ায় টাইব্রেকিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাকলাইন।

সাকলাইনের দাবার পৃথিবী একেবারে ছোট। মাত্র ৪ বছরের দাবার ক্যারিয়ার। এরই মধ্যে থানা, উপজেলা ও বিভাগের মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে একটু একটু করে নজর কাড়তে শুরু করেছে সবার। গত ডিসেম্বরে জাতীয় জুনিয়র (অনূর্ধ্ব-২০) দাবায় হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে রেটিং টুর্নামেন্টেও চ্যাম্পিয়ন হল।

৯ রাউন্ডের খেলায় যদিও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে। কোনো গ্র্যান্ড মাস্টারের সঙ্গে দেখা হয়নি সাকলাইনের। সে হারিয়েছে নুসরাত জাহান, ফয়জুল আলম, ওয়াদিফা আহমেদ, নীলাভা চৌধুরী, সাইফ উদ্দিন, স্বর্ণাভ চৌধুরী ও শেখ নাসিরকে। শুধু ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ারের কাছে হেরেছে, ড্র করেছে আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ উদ্দিনের সঙ্গে।

চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও অর্থ পুরস্কার হাতে উচ্ছ্বসিত সাকলাইন। ছবি: সংগৃহীত

দাবার টানে পাবনা ছেড়ে ঢাকায়

পাবনার ফরিদপুর থানায় সাকলাইনের বাবা আবুল কালাম আজাদের রয়েছে জুতার দোকানের ব্যবসা। শখের বসে একদিন ছেলেকে দাবার ঘুটি হাতে ধরিয়ে দেন। বাবার সঙ্গেই নিয়মিত খেলতো সাকলাইন, “বাবা আমাকে দাবা খেলা শিখিয়েছে। আমি এক সময় টুর্নামেন্টে খেলার জন্য বাবার কাছে বায়না ধরতাম। বাবা শুরুতে এলাকায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়ে যেতেন। এরপর ঢাকায় এসে দাবা ফেডারেশনের খোজ পাই। এখানে খেলার সুযোগ বেশি, তাই বাবা পরিবারসহ আমাদের সবাইকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন।” বর্তমানে রাজারবাগ পুলিশলাইন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে সাকলাইন।

সাকলাইনের রয়েছে সহজাত প্রতিভা

শুরুতে কোনো কোচের কাছে খেলা শেখেনি সাকলাইন। কিন্তু অনলাইনে দাবা টুর্নামেন্টে তার খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল। এরপর শাকিলের অধীনে কোচিং শুরু করে সাকলাইন। এক্ষেত্রে সাকলাইনকে আর্থিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। সাকলাইনের মাঝে অমিত সম্ভাবনা দেখছেন শাকিল, “সে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। ওর ভেতরে একজন ভালো দাবাড়ু হওয়ার সব রকমের গুণ আছে। যেভাবে সে খেলছে, এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে ৩-৪ বছরের মধ্যে সে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পেতে পারে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত