Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : পিআইডি
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : পিআইডি
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার মাধ্যমে দেশে হট্টগোল উসকে দিচ্ছে অভিযোগ করে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবির ছাত্র আবু সাঈদের বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিতে শনিবার রংপুরে যান প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, “সংবাদপত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবেদন আসছে। তারা কেন হামলার শিকার হবে? তারা কি দেশের নাগরিক নন? তোমরা (শিক্ষার্থীরা) দেশকে বাঁচাতে পেরেছ, সংখ্যালঘু পরিবারগুলোকে কি বাঁচাতে পারবে না?”

এ ধরনের হামলাকে ঘৃণ্য কাজ হিসেবে অভিহিত করে তিনি শিক্ষার্থীদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব সংখ্যালঘু পরিবারকে যেকোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তোমাদের বলতে হবে– কেউ তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা আমাদের ভাই, আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি, আমরা একসঙ্গেই থাকব।”

পুরো বাংলাদেশকে একটি পরিবার উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূস বলেন, “এর চেয়ে সুন্দর পরিবার আর নেই। পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে, কিন্তু এত সুন্দর পরিবার নেই।”

ছাত্ররা দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে– এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন রংপুরের হাতে। তোমরা একে কোথায় নিতে চাও? যেখানে খুশি নিয়ে যেতে পারবে। তোমাদের সেই ক্ষমতা আছে। এটা গবেষণার বিষয় নয়। এটা তোমাদের অন্তর্নিহিত শক্তি।”

আবু সাঈদের জীবন উৎসর্গের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আবু সাঈদ এক মহাকাব্যিক চরিত্র। ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে অনেক কবিতা, অনেক সাহিত্য, অনেক কিছু লেখা হবে।”

বাংলাদেশের ছাত্র-যুবকরা সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তোমরা এখানে যা করেছ তা আমাদের দ্বিতীয় বিজয়। এই বিজয় উৎসব যেন আমাদের হাত ছাড়া হয়ে না যায়। কেবল তোমরাই এটা করতে পেরেছ। আমরা কেউই (বৃদ্ধরা) পারিনি।”

যৌবনের বয়সসীমা অতিক্রম করেছে এমন লোকেরা বাধা সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে ড. ইউনূস তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

যেকোনো কাজ করতে স্বপ্নের প্রয়োজন– এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বপ্ন না থাকলে বিশৃঙ্খল কাজ হবে। তোমাদের যদি স্বপ্ন থাকে, তাহলে তোমরা স্বপ্নের পেছনে ছুটবে। দেখতে পাবে যে এটি হয়ে গেছে। প্রথমে এটা অসম্ভব মনে হবে। কাজে নামলেই দেখবে কাজ হয়ে গেছে। তোমাদের যে শক্তি আছে তা হল অসম্ভবকে সম্ভব করার শক্তি। তোমাদের সামনে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।”

যুবসমাজকে কখনো পিছপা না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশে ছাত্ররা যা করেছে, তা দেশের প্রবীণরা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা করতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তোমাদের যেখানে যাওয়ার কথা ছিল, আমরা তোমাদের  সেখানে নিয়ে যেতে পারিনি।”

দেশ পরিষ্কার করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা সবকিছু পরিষ্কার করব, সবকিছু পরিষ্কার না করা পর্যন্ত আমরা স্বস্তি পাব না।”

রংপুর সার্কিট হাউসে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরেকটি অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস তাদের শৃঙ্খলায় ফেরার তাগিদ দেন।

সরকার দেশের নাগরিকদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সব কিছু করবে জানিয়ে তিনি বাংলাদেশকে একটি সভ্য দেশে পরিণত করতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। বাসস।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত