Beta
বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪

কাঁচা মরিচ ১২০-১৬০ টাকা কেজি, কমেছে সবজি-মুরগির দামও

কারওয়ান বাজারসহ ঢাকার সব বাজারেই বেড়েছে পণ্য সরবরাহ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কারওয়ান বাজারসহ ঢাকার সব বাজারেই বেড়েছে পণ্য সরবরাহ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of শেখ শাফায়াত হোসেন

শেখ শাফায়াত হোসেন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা শুরু হলে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে বাজারে। পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেখা দেয় ঘাটতি। এতে নিত্যপণ্যের বাজার হয়ে ওঠে অস্থিতিশীল।

তিন দিন পর গত বুধবার সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার করে সরকার। তবে শুক্রবার পর্যন্ত বলবৎ রয়েছে কারফিউ, বাড়ানো হয়েছে শিথিলের সময়ও।

শিথিলের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, বাজারে পণ্যের সরবরাহও বাড়ছে। এতে দাম কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব ধরনের সবজির।

শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ স্থানেই প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমেছে।

বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৬০ টাকা কেজিতে। কোরবানির ঈদের আগে থেকেই যা ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ২৮০-৩২০ টাকা প্রতিকেজি দরে। সহিংসতার মধ্যে এই দাম কোথাও কোথাও ৪৫০ টাকাতেও উঠেছিল।

বিক্রেতারা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ দেশে ঢুকতে শুরু করেছে। এ কারণে দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের দামও কমে এসেছে।

নর্দা এলাকার মোড়ল কাঁচা বাজারে দেখা মিলল আমদানি হওয়া কাঁচা মরিচের। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন বিক্রেরা রবিউল ইসলাম।

তিনি জানান, তুলনামূলক মোটা এবং হালকা সবুজ রঙের এই কাঁচা মরিচ গত বৃহস্পতিবার রাতে পাইকারি বাজার থেকে কিনে এনেছেন। প্রতিকেজি ১০০ টাকা দরে পাইকারি কিনে এনেছেন। ১২০ টাকা করে খুচরা বিক্রি করছেন।

একই বাজারে গাঢ় সবুজ রঙের কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে রামপুরা কাঁচা বাজার ও মহাখালি বাজারে এখনও এ ধরনের কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।

শুক্রবার ঢাকার প্রধান পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে তিন ধরনের কাঁচা মরিচ দেখা যায়। ধরনভেদে এসব মরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ১৪০ টাকা ও ১৬০ টাকা কেজি দরে।

আন্দোলনে জের ধরে সৃষ্ট সহিংসতার মধ্যে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। সংঘর্ষের কারণে দেশের বেশিরভার অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

গত রবিবারের পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কারফিউ শিথিলের সময়। মূলত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাসহ জরুরি কাজ শেষ করতেই কারফিউ শিথিল করা হয়। সপ্তাহের শুরুতে কাঁচা বাজারে পণ্য সরবরাহ তুলনামূলক কম থাকায় বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম ছিল বেশি।

বিক্রেতারা বলছেন, বুধবারের পর থেকে কাঁচা বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়তে শুরু করে।

শুক্রবার বেশিরভাগ কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ১০-২০ টাকা কমে এসেছে। প্রতিকেজি পটল ৫০-৬০ টাকা, কচুর মুখি ৭০ টাকা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙ্গে ৬০-৭০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা করে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এছাড়া বেশির ভাগ বাজারে উচ্ছে ও করল্লা ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৭০-১০০ টাকা পর্যন্ত কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।

তবে আলু আগের মতোই প্রতিকেজি ৬০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়। পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। আদা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। রসুন ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফার্মের মুরগির লাল ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। সহিংসতা শুরুর পর এই ডিম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ডজন দরেও বিক্রি হয়েছে কোনও কোনও এলাকায়।

এছাড়া কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। শুক্রবার ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোয় ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা করে কেজি বিক্রি করতে দেখা যায়। কয়েকদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৭০ টাকা কেজিতে। এছাড়া সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে।

কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফেরদৌস হাসান। তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “গত সপ্তাহে যে কাঁচামরিচ ৩২০ টাকা কেজি ছিল, আজ তা ১৬০ টাকা করে কিনেছি। ডিমের দামও কিছুটা কমেছে।

“গত সপ্তাহে ১০০ টাকার নিচে কোনও সবজি ছিল না। আর এ সপ্তাহে বেগুন, শসা, পটল, ঝিঙ্গা, লাউসহ সব ধরনের সবজির দাম কমেছে।”

রামপুরা কাঁচাবাজারে কথা হয় গৃহিনী মুনমুন রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “গত সপ্তাহে ডিম কিনেছিলাম ১৮০ টাকা ডজন, আজ কিনেছি ১৫৫ টাকা ডজন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে বাজারে এসে যাচাই-বাছাই করেও কিনতে পারিনি। তখন সব জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি ছিল। আজ সবজির দাম অনেকটা হাতের নাগালে রয়েছে।”

ওই বাজারে কাঁকরোল ৮০, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। বরবটি ৮০-৯০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাঝারি আকারের লেবু ২০-৩০ টাকা হালি, প্রতি পিস জালি কুমড়া ৬০-৭০ টাকা, মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি আঁটি লাউশাক ও পুঁইশাক ৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত