টানা দুই বছর ধরে কমেছে চীনের জনসংখ্যা। তবে ২০২৪ সাল এক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে বলে আশা করছেন চীনারা। কারণ ২০২৪ সালটি ‘ড্রাগনের বছর’। চীনা সংস্কৃতিতে ‘ড্রাগনের বছর’কে শিশু জন্মের জন্য অত্যন্ত শুভ বছর বলে মনে করা হয়।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অনেক বাবা-মাই তাদের সন্তানের জন্মের সময়কে এই ‘শুভ সময়ের’ সঙ্গে মেলানোর চেষ্টায় থাকেন। চীন, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে ‘ড্রাগন শিশুদের’ অর্থাৎ ‘ড্রাগনের বছরে’ জন্ম নেওয়া শিশুদের ঐতিহ্যগতভাবে সৌভাগ্যবান বলে মনে করা হয়। তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, জীবন সাফল্যময়ী হবে— এমন বিশ্বাস সেখানে প্রচলিত।
২০২৩ সালে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমে যায়। এমন পরিস্থিতি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে শুরু হতে যাচ্ছে ‘ড্রাগন বছর’। প্রতি ১২ বছর পরপর চীনা ক্যালেন্ডারে আসে ‘ড্রাগনের বছর’। সবশেষ ২০১২ সালটি ছিল চীনা ক্যালেন্ডারের ‘ড্রাগনের বছর’।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি গ্রাফ অনুযায়ী, ড্রাগনের বছরে জন্মহার কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এ ধরনের কুসংস্কার চীনের জনসংখ্যা নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে কতটুকু কাজে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ওয়াং ফেং ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, “অতীতে এ ধরনের শুভ বছরগুলোতে চীনে জন্মহার বেড়েছে। তবে বর্তমানে যে হতাশাজন অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে এবং তরুণদের মধ্যে যেভাবে হতাশা দেখা যায়, তাতে এ বছর খুব আশাব্যঞ্জক কিছু হওয়ার বিষয়ে আমি সন্দিহান।”
চীনের অনেক সাধারণ মানুষের মতামত অনেকটা এরকমই। তাদেরই একজন সাংহাইয়ে কর্মরত ৩০ বছর বয়সী ডোরা গাও জানান, বর্তমানে তার যে আর্থিক অবস্থা, তাতে একটি শিশুকে লালন-পালনের ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী নন। তিনি বলেন, “শিশুর শিক্ষার পেছনে খরচ করার মতো যথেষ্ট সম্পদ আমার নেই। এখন প্রতিযোগিতা অনেক কঠিন, আর এর সঙ্গে উচ্চ খরচের বিষয়টিও রয়েছে।”