বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আটকের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিপুল সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী।
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের আভ্যন্তরীণ টার্মিনাল থেকে ডেকে তাকে আটক করা হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
তারা এসময় ‘জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম, জেলের তালা ভাঙবো চিন্ময়কে আনবো, জেগেছেরে জেগেছে সনাতনী জেগেছে’সহ নানা ধরনের স্লোগান দেয়। তাদের এ বিক্ষোভ সমাবেশের কারণে চেরাগী পাহাড় মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আটকের কড়া প্রতিবাদ জানান বক্তারা।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চেরাগী পাহাড় ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নতুন কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। সমাবেশে আসছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা; বক্তব্য চলছিল তাদের নেতাদের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হলে তার প্রতিবাদে গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে সমাবেশ করে সনাতন জাগরণ মঞ্চ। ওই সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় ব্রহ্মচারী।
সমাবেশের দিন চট্টগ্রাম নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপরে ইসকনের গেরুয়া রঙের আরেকটি পতাকা ওড়ানোর অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে ৩০ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন চট্টগ্রাম শহরের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান। তারপর অবশ্য তাকে পদচ্যুত করেছিল বিএনপি।
ওই ঘটনায় দুই সনাতন ধর্মাবলম্বী রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশকে গ্রপ্তার করে পুলিশ। তার প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে সনাতন জাগরণ মঞ্চ।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সোমবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ফেরার পথে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদের প্রতিষ্ঠাতা কুশল বরণ চক্রবর্তী।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা ঢাকা থেকে বিমানযোগে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে শাহজালাল বিমানবন্দরে এসেছিলাম। এখানে আসার পর এয়ারপোর্টের ডোমেস্টিক এরিয়ায় অপেক্ষার সময় বিকাল ৪টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়।”
ছাই রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে তুলে নেওয়া হয় বলে জানান তিনি। তবে তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও ধারণা দিতে তিনি পারেননি।
তার কাছে অভিযোগটি পেয়ে বিমানবন্দর থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না। এরপর যোগাযোগ করা হলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বিষয়টি স্বীকার করেন।