চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আমদানি নিষিদ্ধ রং ফর্সাকারী ক্রিমের একটি চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গৌরি ক্রিম নামের এই প্রসাধনীটি পাকিস্তানে তৈরি হয়।
মোট আটটি চালানে ২৪টি ব্যাগেজে আসা এই পণ্য বিমানবন্দরের কার্গো শাখা থেকে রবিবার রাতে কাস্টমস কর্মীদের মাধ্যমে খালাসের চেষ্টা করেছিল এক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান।
একটি মাধ্যম থেকে এ খবর পেয়ে বিমানবন্দরে কর্মরত কাস্টমসের উপকমিশনার অলক কুমার হাজরা সরাসরি ঘটনাস্থলে যান এবং স্ক্যান করার আগেই চালানটি আটকে দেন।
পরে সোমবার দুপুরে ব্যাগেজগুলো খুলে কায়িক পরীক্ষার পর বিভিন্ন কসমেটিকস পণ্যসহ ১৫ হাজার ৬০০ পিস গৌরি ক্রিম পাওয়া যায়। এসব পণ্য জব্দ দেখানো হয়।
চালানটির বাজারমূল্য ৫৬ লাখ টাকার বেশি বলে জানিয়েছে কাস্টমস।
কাস্টমসের এক কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বেশ কিছু কসমেটিকস আইটেমসহ চালানটি আটক করা হয়। পরে চালান থেকে ১৫ হাজার ৬০০ পিস গৌরি ক্রিমের সন্ধান মেলে। আমদানি নিষিদ্ধ বলে এখান থেকে রাজস্ব পাওয়া যাবে না। আমদানি নীতি অনুযায়ী নিলামেরও কোনও সুযোগ নেই। এজন্য প্রক্রিয়া মেনে কসমেটিকসগুলো ধ্বংস করা হবে।”
চালানটি সম্পর্কে কথা হয় বিমানবন্দরে কর্মরত একটি সংস্থার কর্মীর সঙ্গে। তার অভিযোগ, বিমানবন্দরে কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের যোগসাজসে এসব পণ্য দেশে প্রবেশ করে। এসব জায়গা থেকে সুবজ সংকেত না পেলে এত বড় চালানের দেশে আসার কথা নয়।
আটটি রং ফর্সাকারী ক্রিমে ক্ষতিকর মাত্রায় পারদ ও হাইড্রোকুইনোন পাওয়ায় ২০২০ সালে সেগুলো নিষিদ্ধ করে মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)।
পাকিস্তানে উৎপাদিত ও দুবাই থেকে আসা এই আটটি ক্রিম হলো, গোরি কসমেটিকস লিমিটেডের গৌরি, এস জে এন্টারপ্রাইজের চাঁদনী, কিউসি ইন্টারন্যাশনালের নিউ ফেস, ক্রিয়েটিভ কসমেটিকস (প্রা.) লিমিটেডের ডিউ, গোল্ডেন পার্ল কসমেটিকসের গোল্ডেন পার্ল, পুনিয়া ব্রাদার্সের ফাইজা, নুর গোল্ড কসমেটিকসের নুর ও হোয়াইট পার্ল কসমেটিকসের হোয়াইট পার্ল প্লাস।
পণ্যগুলো ব্যবহার করলে চর্মরোগসহ আরও জটিল রোগের সৃষ্টি হতে পারে এমন সতর্কতা জারি করে সেগুলো বিক্রি, বিপনন ও আমদানি নিষিদ্ধ করে বিএসটিআই।
এরপর থেকে গৌরি ক্রিম বৈধভাবে আমদানি হচ্ছে না। তবে অবৈধ পথে আসা এই ক্রিম এখনো দেশে বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়।